জুলাই হত্যাকাণ্ড : মৃত ব্যক্তির নামে মামলা

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩:২৪
-67bec1c1ca3be.jpg)
জুলাই হত্যাকাণ্ড মামলার মৃত আসামি হারুন মোড়ল। ছবি : বাংলাদেশের খবর
গাজীপুরের শ্রীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি ছুড়ে হত্যার ঘটনায় এক মৃত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
মামলা হওয়ার ৭০ দিন আগে ওই ব্যক্তি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। তবে, হত্যার সময় ওই ব্যক্তি জীবিত ছিলেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় ৩০১ নম্বর আসামি করা হয়েছে মৃত হারুন মোড়ল (৫০)। তিনি উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের সিংগারদীঘি গ্রামের মৃত জিল্লুর রহমান মোড়লের ছেলে ও মাওনা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান হারুন। মৃত ব্যক্তিকে আসামি করায় তার পরিবারের সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
গত ৫ আগস্ট উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা পল্লী বিদ্যুৎ মোড় এলাকায় নির্বিচারে ছোড়া গুলিতে নিহত কলেজছাত্র মাসুম বিল্লাহ মা মোর্শেদা খাতুন বাদী হয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি শ্রীপুর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ৩৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
মৃত আসামি হারুন মোড়লের মা হামিদা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের নামে মামলা হইছে এটা আমার জানা নাই। আমার ছেলে মারা গেছে ডিসেম্বরের ১৩ তারিখ রাতে। মারা যাওয়ার ৭০ দিন পর আমার ছেলের নামে মামলা হইছে। এটা দুঃখজনক।’
মৃত আসামির হারুন মোড়লের চাচাতো ভাই ফাহাদ মোড়ল বলেন, ‘আমার ভাই মারা গেছে এই শোক এখনো শেষ হয় নাই।’
মৃত আসামির হারুন মোড়লের ছেলে সিয়াম বলেন, ‘আমার বাবা আওয়ামী লীগ করতেন। ৭০ দিন আগে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে বাবা মারা গেছেন। তাই বলে মারা যাওয়ার পরও আসামি হবেন। এতে আমরা পরিবারের সদস্যরা অনেক কষ্ট পেয়েছি।’
মৃত আসামির হারুন মোড়লের মেয়ে জান্নাতুল বলেন, ‘আমার আব্বু জীবিত থাকতেও কারও সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করেননি। মামলা যেহেতু হয়েছে, পুলিশ এসে কবর খুঁড়ে বাবাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাক।’
এ বিষয়ে মামলার বাদী মোসা. মোর্শেদা খাতুন বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির নামে মামলা হইছে এটা আমার জানা ছিল না। এমন হয়ে থাকলে তদন্ত করে বাদ দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ‘মামলাটি করেন বাদী, তদন্ত করা পুলিশের কাজ। এ রকম হয়ে থাকলে তদন্ত শেষে তার নাম বাদ দিয়ে চার্জশিট দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী কলেজছাত্র নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আ ক ম মোজ্জামেল হক, পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, হারুন অর রশিদসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৩৩৪ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মাসুম বিল্লাহর মা মোর্শেদা খাতুন।