ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলি এলাকায় একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজ শিক্ষিকা ও এক ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, যারা পাশাপাশি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে দিকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত দুজন হলেন ফরিদপুরের সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাদিয়া বেগম (৩৪) ও সোনালী ব্যাংক মতিঝিল শাখার প্রিন্সিপাল কর্মকর্তা ফারুখ হাসান (৩৮)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই এলাকার নূরুল ইসলামের বাড়ির নিচতলায় তিনটি ফ্ল্যাট। এর মধ্যে পৃথক দুটি ফ্ল্যাট ভিন্ন ভিন্ন সময় ভাড়া নেন সাদিয়া বেগম ও ফারুখ হাসান। রাতে ফারুখ হাসানের ঘর থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ফারুখের গলায় দড়ি বাঁধা ও সাদিয়ার মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে।
বাড়ির মালিক নূরুল ইসলামের ছেলে মাহমুদুল হাসান বলেন, এক বছর আগে সাদিয়া বেগম একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। এ বছরের এপ্রিল মাসে সোনালী ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা পাশের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। তবে এক মাস আগে ভাড়া নিলেও চলতি মাসে ফারুখ হাসান ওই বাসায় ওঠেন। পরে পরিবার নিয়ে তার বাসায় ওঠার কথা ছিল।
পুলিশ সূত্র জানা গেছে, এখানে চাকরি করলেও সাদিয়া বেগম ঢাকার সূত্রাপুরের বাসিন্দা। সাদিয়ার স্বামীর নাম শেখ শহীদুল ইসলাম। তিনি ঢাকার সূত্রাপুর এলাকায় যানবাহনের খুচরা যন্ত্রাংশের ব্যবসা করেন। সাদিয়া কিছুদিন ঢাকা ও কিছুদিন ফরিদপুরে থাকেন। তাদের দুই ছেলে। একটির বয়স ১১ বছর, আরেকটির বয়স সাড়ে চার বছর। সাদিয়া বেগম তার ছোট ছেলেকে নিয়ে ফরিদপুর থাকতেন। বুধবার শহীদুল ইসলাম ও তার ফুপু ফরিদপুরে আসেন। অন্যদিকে, ফারুখের বাড়ি যশোরের শার্শা এলাকায়।
শহীদুল ইসলাম জানান, রবিবার সকালে তার স্ত্রী কলেজে যান। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি ফেরেননি। ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাই আগেই থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন তিনি।
জিডির পর পুলিশ সাদিয়ার খোঁজ শুরু করে। ঘটনাটি বাড়িওয়ালাকে জানানো হয়। রাত ১০টার দিকে বাড়িওয়ালা ব্যাংক কর্মকর্তার ফ্ল্যাটে যান। সেখানে ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখতে পাওয়া যায়। ভেতরে দুটি মৃতদেহ দেখা যায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নেয়।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) বিপুল চন্দ্র দে জানান, ধারণা করা হচ্ছে, দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। এ ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাদিয়া বেগমের স্বামী শহীদুল ইসলামকে থানায় নেওয়া হয়েছে।