রাজধানীর চকবাজার থানায় বাবার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক ছাত্রী। শনিবার বিকালে করা ওই জিডিতে অভিযোগ, তার বাবার চরিত্র ভালো নয়, তিনি নেশাগ্রস্ত। মা ও তারা তিন বোন মান-সম্মানের ভয়ে এসব বাইরে জানাত না। কিন্তু এখন তার অসুস্থ মাকে ভালোভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। তাদের তিন বোনকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। তাই নিরাপত্তা, থাকার জায়গা ও লেখাপড়ার খরচের দাবিতে জিডি করা হয়েছে। তবে ওই ছাত্রীর বাবা বলছেন, তিনি সন্তানদের খুব ভালোবাসেন। হজে যাওয়ার আগে নেশা করলেও এখন নিয়মিত নামাজ পড়েন। স্ত্রীর পরিবারের লোকজন সন্তানদের দিয়ে তাকে বিপদে ফেলতে চাইছে। তিনি নিজেও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
গতকাল রোববার বিকালে স্কুলছাত্রীটি সাংবাদিকদের জানায়, ‘আগে আমরা অনেক ধনী ছিলাম। ভালো টাকা-পয়সা, বাড়ি-গাড়ি সব ছিল। কিন্তু আমার বাবা অনেক টাকা নষ্ট করতেন। বিভিন্ন রিসোর্টে নতুন নতুন মেয়ে নিয়ে থাকতেন। আমাদের অনেক দামি ড্রেস কিনে দিতেন। আম্মুর একেকটা ড্রেস থাকত ৫০ হাজার টাকার।’ ওই ছাত্রীর ভাষ্য মতে, ‘আমাদের একটা কাজের মেয়ে ছিল, বাবা ওকেও প্রেগনেন্ট করে দিলেন। আম্মু নিজের মান-সম্মানের জন্য কথাগুলো কাউকে জানাননি। এখন আমাদের মাত্র একটা ফ্ল্যাট আছে, আর কিচ্ছু নাই।’ জিডিতে ওই ছাত্রী আরো বলে, ‘এই অবস্থায় চিন্তা করতে করতে যেদিন আম্মু স্ট্রোক করেন, তার আগের দিনও বাবা তাকে মারধর করেন। তাকে মিরপুরে সিআরপি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আম্মুর সঙ্গে বাবা দেড় মাস ছিলেন। বাড়িতে এসে এখন আম্মু শুধু বাবার কথাগুলোই বলেন। ডাক্তাররাই বলেছেন, আম্মুর ব্রেনে এখন কিছু নেই, তাকে যা শেখানো হবে তাই শিখবেন। এই অবস্থায় চাচা-চাচি চাচ্ছেন, আমাদের তিন বোনকে ফ্ল্যাট থেকে বের করে দিয়ে তারা এটা দখল করবেন।’ ওই ছাত্রীর অভিযোগ, ‘গত ১ মে চাচা-চাচি আমাদের মেরে ঘর থেকে বের করে দেন। তিনি তাদের কিছু বলেননি। এখন আমরা ওই বাসাতেই আছি, আমাদের তিন বোনকে একটা রুমে রাখা হয়েছে। আমরা এখন আম্মুর সামনে গেলে তিনি চিৎকার দেন। বলেন, আমরা তার ক্ষতি করতে চাচ্ছি।’ ওই ছাত্রী আরো বলে, আমাদের রুমের দরজা নেই। এখন আমরা এক বোন ঘুমালে অন্য দুই বোন জেগে পাহারা দেয়। এই অবস্থায় সে তার মামার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে থানায় জিডি করেছে। পুলিশও তাদের বাড়িতে গিয়ে তার বাবার সঙ্গে কথা বলেছে।
জানতে চাইলে চকবাজার থানার ওসি শামীম অর রশীদ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।