জিআই স্বীকৃতি পেল শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী ‘ছানার পায়েস’
শাহরিয়ার শাকির, শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:০৩
ছবি : বাংলাদেশের খবর
জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে শেরপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী ‘ছানার পায়েস’। বৃহস্পতিবার ( ৫ ডিসেম্বর) দুপুরে এ স্বীকৃতির সনদ গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান।
এর আগে, গুণে-মানে অনন্য এই ছানার পায়েসকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য গত জানুয়ারি মাসে জেলা ব্র্যান্ডিং বাস্তবায়ন কমিটি সুপারিশ পাঠায় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে।
এ সুপারিশের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে বৃহস্পতিবার ৪৪ তম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল শেরপুরের ‘ছানার পায়েস’।
রসালো ও মুখরোচক অসাধারণ স্বাদের এই পায়েসের সুনাম ছড়িয়ে আছে দেশের আনাচে-কানাচে। শেরপুরের মিষ্টির দোকানগুলোতে প্রতিদিন ৪শ’ টাকা ধরে প্রায় একহাজার কেজি ছানার পায়েস বিক্রি হচ্ছে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও যায় এ পায়েস। ভোক্তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, দ্রুতই এটিকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের।
জানা গেছে, শত বছর আগে জেলার ঘোষপট্টিতে প্রথম ছানার পায়েস তৈরি হয়। সে সময়কার জমিদাররা ঘোষপট্টিতে বানানো ছানার পায়েস আত্মীয় কিংবা অন্য জমিদারের কাছে উপঢৌকন হিসেবে পাঠাতেন।
কারিগররা জানান, ছানার পায়েস তৈরিতে লাগে দুধ, চিনি, এলাচ ও সামান্য পরিমাণ ময়দা। প্রথমে দুধ জ্বাল দিয়ে ক্ষীর করা হয়। এরপর আলাদাভাবে দুধ থেকে ছানা কেটে তাতে সামান্য ময়দা মিশিয়ে ছোট ছোট গুটি করা হয়। এই গুটি চিনিমিশ্রিত শিরায় ভিজিয়ে আগে তৈরি করা ক্ষীরে ছেড়ে হাল্কা আঁচে জ্বাল দেওয়ার পর তৈরি হয় সু-স্বাদু এই মিষ্টি।
শেরপুর শহরস্থ এক হোটেলের কারিগর আরমান বলেন, আমাদের শেরপুরের ছানার পায়েস খুবই সুস্বাদু। আমরা অনেক দিন ধরে এ পায়েস বানাই।
পৌর শহরের অনুরাধা মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের কারিগর কালিপদ বলেন, ‘আমাদের এখানে খাঁটি দুধ দিয়ে তৈরি করা হয় ছানার পায়েস। তাই স্বাদটা একটু ভিন্ন। চাহিদাও ব্যাপক। এককেজি ছানার পায়েস তৈরি করার জন্য দুইকেজি দুধ, আধাকেজি চিনি, সামান্য পরিমাণ ময়দা ও ১০-১৫ গ্রাম এলাচ লাগে।’
ক্রেতা সাইদুর বলেন, ‘আমি শহরে আসলে ছানার পায়েস খাওয়ার জন্য আসি। এখানকার মিষ্টি, ছানার পায়েস খুবই ভালো। আমার যেকোনো অনুষ্ঠানের ছানার পায়েস, মিষ্টি, স্বন্দেশ এখান থেকে নিয়ে যাই।’
আরেক ক্রেতা আবু হানিফ বলেন, ‘ছানার পায়েস ছাড়া আমাদের কোনো আয়োজন চলেই না। আমরা শেরপুরের মানুষ ছানার পায়েসটাকে আয়োজনের বিশেষ অংশ মনে করে থাকি।’
এটিআর