Logo

অর্থনীতি

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

মদিনা পোল্ট্রি ফিডের বিরুদ্ধে আমদানিকারকের জিডি

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:৫৭

মদিনা পোল্ট্রি ফিডের বিরুদ্ধে আমদানিকারকের জিডি

পাওনা টাকা চাওয়ায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে মদিনা পোল্ট্রি ফিডের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মদিনা পোল্ট্রি ফিডের মালিক জহিরুল ইসলাম ও তার সহযোগী ডিপো ম্যানেজার মনিরের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আইএসটি ট্রেডিংয়ের ভুক্তভোগী ম্যানেজার জসিম উদ্দিন।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সীতাকুণ্ড থানায় জিডি করা হয়। যার নম্বর ৬৮৯।

ভুক্তভোগী জসিম উদ্দিনকে দেওয়া হুমকির ফোন রেকর্ড বাংলাদেশের খবরের প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। যেখানে মদিনা পোল্ট্রি ফিডের ম্যানেজার মনিরকে বলতে শোনা যায়, ‘তুই আমার স্যারকে চিনছ না, তোর আইন দিয়ে যদি আমার কিছু ছিঁড়তে পারস ছিঁড়। তোর মতো কত আতিপাতি মাস্তান রাস্তায় ফেলে দিতে পারি। আমার স্যারকে চিনস, হে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেনের পার্টনার।’

জিডিতে উল্লেখিত তথ্য পর্যালোচনা করে জানা গেছে, বিদেশ থেকে মুরগির খাবারসহ অন্যান্য উপাদান আমদানি করে আইএসটি ট্রেডিং কর্পোরেশন। আইএসটি ট্রেডিং থেকে পণ্য কিনে ব্যবসা করে মদিনা ট্রেডিং কর্পোরেশন। গেল বছরের ১০ নভেম্বর আইএসটি ট্রেডিং কোম্পানির কাছ থেকে এক হাজার টন পোল্ট্রি খাদ্য (সাড়ে ১১ কোটি টাকা) বাকিতে ক্রয় করে মদিনা পোল্ট্রি ফিড। 

জানা গেছে, ওই পণ্য সীতাকুণ্ড মডেল থানাধীন সলিমপুর ইউনিয়নের পাইলন গুদাম, ভাটিয়ারী ওভারব্রিজের পাশে সবুজ গুদাম, ভাটিয়ারী কদম রসুল এলাকার সার কার্পেট, ভাটিয়ারী বিএম ডিপোর পাশে কাশেম গুদাম ও ভাটিয়ারী শহীদ মিনারের পূর্বদিকে ইট ভাটার ভেতরে গোয়ালিনী গুদামে গুদামজাত করে।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়, এখন পর্যন্ত এসব পণ্যের বিপরীতে কোনো মূল্য পরিশোধ করেনি মদিনা পোাল্টি ফিড। বরং টাকা চাইলেই মদিনা ট্রেডিংয়ের চট্টগ্রাম অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা ডিপো ম্যানেজার মনির বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।  

জানতে চাইলে ম্যানেজার মনির বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘আমি কিছুই জানি না ভাই। আমি তো কোম্পানির মালিক না, এখানে চাকরি করি।’

মোবাইল ফোনে হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কথা বলতে পারব না। অভিযোগের বিষয়েও আমি কিছুই বলতে পারব না। ওখানে, চট্টগ্রামের যে ইনচার্জ আছেন, আপনি তার সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় তিনি জানান, তিনি এখন বেনাপোলে দায়িত্ব পালন করছেন। 

বর্তমান জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) ফেরদৌসের পাসপোর্টে পাওয়া মোবাইল ফোন নম্বরে ফোন করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নাম ফেরদৌস। কিন্তু আমি কোনো ফিড কোম্পানিতে চাকরি করি না। আমি গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ করি। বাড়িও চট্টগ্রামের বাঁশখালী এলাকায়। যদিও পাসপোর্টে তার গ্রাম লক্ষ্মীপুর সদরে উল্লেখ রয়েছে।

এদিকে মদিনা পোল্ট্রি ফিডের কাগুজে মালিক জহিরুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার মোবাইল ফোন নম্বর ও হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও মেলেনি কোনো উত্তর। তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, প্রতিষ্ঠানটির কাগুজে মালিক জহিরুল ইসলাম হলেও প্রকৃত মালিক আড়ালে থাকা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠান আইএসটি ট্রেডিংয়ের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মদিনা পোল্ট্রি ফিডের প্রত্যক্ষভাবে মালিকানায় থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক সকল কাজেই প্রভাব রাখেন তিনি। স্থানীয় বিএনপি ও হেফাজতে ইসলামের স্থানীয় নেতারা বিষয়টি সমাধানের সুপারিশ করলেও কর্ণপাতই করেনি সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ। 

সোমবার সন্ধ্যায় সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি মনেই পড়ছে না বলে জানান। ঘটনার দিনক্ষণ ও নেতাদের সুপারিশের কথা মনে করিয়ে দিলে তিনি বলেন, এটা আমার থানা এলাকার বিষয় না। যদি আমার এলাকায় সংঘটিত কোনো ঘটনা হতো, তাহলে আমি নিয়ে নিতাম।

এএস/ওএফ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর