ফের রিজার্ভ নেমে ১৯.৯৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:৫০
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ২৫ দশমিক ২২১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ গণনার মান অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে অর্থাৎ ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার।
চলতি বছরের শুরুতে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ ছিল ২১ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়। তবে এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, তা হলো ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ।
এ তথ্য আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি আছে। প্রতি মাসে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৪ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামে। সে সময় বৈদেশিক ঋণ ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কেনার মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানো হয়। আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে। আবার বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার যোগানের চেষ্টা করছে। তবে আগের দায় পরিশোধ করতে গিয়ে রিজার্ভ কিছুটা কমেছে।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সাম্প্রতিক সময়ে আবারও ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। এটি দেশের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ একটি দেশের আমদানি ব্যয় মেটানো, ঋণ পরিশোধ ও মুদ্রার স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, রপ্তানি আয় কমে যাওয়া, প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) হ্রাস, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ উল্লেখযোগ্য।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় অর্থনৈতিক নীতিমালা গ্রহণ এবং বিশেষ করে আমদানি খরচ নিয়ন্ত্রণ ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে বিশেষজ্ঞদের মত।
এএস/এমজে