বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) ও রেইনবো এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেসের (রিমস) উদ্যোগে মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ‘১০ম বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৫’। আগামী  ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ মেলা চলবে।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় তিন দিনব্যাপী এই মেলা উদ্বোধন করবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। 

এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানী বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স থিজস ওয়াউডস্ট্রা এবং চীনা দূতাবাসের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কাউন্সেলর সং ইয়াং।

এই মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।  প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে। মেলায় প্রদর্শনী ছাড়াও প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।

২২টি দেশের ২০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠান মেলায় নিজেদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে। এ মেলার সঙ্গে ‘১২তম অ্যাগ্রো বাংলাদেশ এক্সপো ২০২৫’, ‘ফুড ইনগ্রেডিয়েন্ট এক্সপো ২০২৫’ এবং ‘বেকটেক এক্সপো ২০২৫’ নামে আরও তিনটি মেলা হবে। ‘বেকটেক এক্সপো ২০২৫’-এ বেকারি শিল্পের টেকনোলজি এবং ইনগ্রেডিয়েন্ট প্রদর্শন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মেলা কমিটির চেয়ারম্যান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশের কৃষি, ফুড, ডেইরি, বেভারেজ ও প্রক্রিয়াজাত খাত অত্যন্ত ভালো করছে। এ খাত দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে যেমন কাজ করছে, তেমনি বিদেশে পণ্য রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে। এ আয়োজনের মাধ্যমে কৃষি, ফুড, ডেইরি ও বেভারেজ প্রক্রিয়াজাত খাত আমাদের সক্ষমতাকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’

বাপার সভাপতি মো. আবুল হাশেম বলেন, বাপা জন্মলগ্ন থেকে ফুড প্রসেসিং খাতের উন্নয়নের স্বার্থে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাপার মূল লক্ষ্যই হলো এ খাতের ক্রমবর্ধমান বিকাশ নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়া। বিশ্বায়নের এই যুগে আগত প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা ছাড়া যেকোনো খাতে উন্নয়নের পথ রুদ্ধ। তাই বাংলাদেশ যাতে কোনোভাবেই এই খাতে পিছিয়ে না যায় সে ব্যাপারে বাপা সদা সচেষ্ট। ফুড প্রসেসিং খাত এবং এর সঙ্গে জড়িত সব প্রতিষ্ঠানের বিকাশ এবং সার্বিক সমন্বয় নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন আরও বেগবান করতে বাপা কাজ করে যাচ্ছে।

বাপা সভাপতি আরও বলেন, বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতের বিকাশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানের খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত এবং রপ্তানি করার লক্ষ্যে বাপা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে বাপার সদস্য সংখ্যা ৪৭৯, যারা বাংলাদেশে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য বিশ্বের ১৪৫টিরও বেশি দেশে রপ্তানি করে চলেছে। দেশের জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান ২২ শতাংশ এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য খাতের অবদান ২ শতাংশ। ২০২৭ সালের মধ্যে এই রপ্তানির পরিমাণ দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে বাপা আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। খাদ্যের গুণগত এবং পুষ্টিমান নিশ্চিতকরণে বিভিন্ন প্রচারণা এবং বাপা সদস্যদের সচেষ্ট করার ভূমিকাও বাপা পালন করে চলেছে। কাজেই বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে এই ধরনের মেলা সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে বাপা আশাবাদী। এছাড়াও দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার সম্প্রসারণ এবং দেশীয় জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণে বাপার ভূমিকা লক্ষণীয়।

রেইনবো এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চানমোহন সাহা বলেন, এর আগে ৯ বার অনুষ্ঠিত এই মেলার আশাতীত সাফল্য, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ এবং দর্শনার্থীদের অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়ার ফলে আমরা এবারের মেলার সাফল্য নিয়েও অত্যন্ত আশাবাদী।

সংবাদ সম্মেলনে বাপার সাধারণ সম্পাদক মো. ইফায়াদুল হক ও অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এএইচএস/এমএইচএস