প্রবাসেও থেমে নেই বাঙালিদের পিঠা উৎসব। আরব আমিরাতে দিনভর নানা আয়োজনে নবান্ন উৎসব উদ্যাপন করেন বাঙালি নারীরা। ছবি : সংগৃহীত
প্রত্যেক দেশেরই একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার থাকে যা তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে লালন করে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা নিঃসন্দেহে পিঠা। প্রবাসেও থেমে নেই বাঙালিদের পিঠা উৎসব। গ্রাম বাংলার নবান্নের আমেজ আরব আমিরাতে ছড়িয়ে দিল নারীদের সংগঠন বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) শারজায় ওয়াই এস ফার্ম হাউজে দিনভর নানা আয়োজনে নবান্ন উৎসব উদ্যাপন করেন বাঙালি নারীরা।
দিনব্যাপী দেশটির আবুধাবি, দুবাই, রাস আল খাইমাহ, ফুজাইরাহ, শারজাহ ও আজমান থেকে নারীরা কমলা রঙের শাড়ি পরে এই উৎসবে যোগ দেন। শিশুকিশোরদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।
শীতকাল মানেই যেন মা-দাদীদের হাতের বিভিন্ন স্বাদ ও নকশার পিঠা আর সেই পিঠাগুলোর পেছনে ইতিহাসের গল্প শোনা। অথবা ধোঁয়া ওঠা গরম ভাপা পিঠা কিংবা চিতই পিঠার সঙ্গে মাংসের ঝোল দিয়ে মজাদার নাস্তা।
দিনব্যাপী এই আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিল পিঠাপুলির প্রতিযোগিতা। এতে অংশগ্রহণ করতে বাহারি স্বাদের দেশীয় হরেক রকম পিঠাপুলি নিয়ে আসেন নারীরা। এতে স্থান পায়- ভাপা পিঠা, মাছ পিঠা, আতিক্কা পিঠা, দুধ চিতই, পিঠা ডালা, ভাপা পুলি, পাটি সাপটাসহ দেশীয় নানা ধরনের পিঠাপুলি। এছাড়া শিশু-কিশোরদের চিত্রাংকন ও বড়দের জন্য ছিল ভিন্ন ভিন্ন প্রতিযোগিতা।
গত ছয় বছর ধরে বাংলাদেশি নারীরা সম্মিলিতভাবে দেশটিতে ঋতুভিত্তিক নানা আয়োজন করে আসছেন। প্রায় দুই হাজার নারীদের এই সংগঠন প্রবাসে নতুন প্রজন্মকে দেশীয় সংস্কৃতি চর্চায় এগিয়ে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।
আরব আমিরাতে নারীদের সংগঠন বাংলাদেশ লেডিস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা লিজা হোসাইন বলেন, ‘গত পনেরো বছরে আমিরাতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছি। প্রবাসী নারীরা দেশীয় অনুষ্ঠান থেকে বঞ্চিত হন। তাই নারীদের সম্মিলিত রাখতে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করি। ধারাবাহিকভাবে দেশের নানা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে প্রবাসীদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি লাবণ্য আদিল বলেন, ‘এটি আমিরাতে বসবাসরত নারীদের বৃহত্তর একটি সংগঠন। আমাদের মূল লক্ষ্যে প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের কাছে দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি পৌঁছে দেওয়া। আমরা দেশের প্রতিটি ঋতুর ছোঁয়া পেয়েছি, হেমন্তের ঘ্রাণ পেয়ে বড় হয়েছি কিন্তু প্রবাসে আমাদের সন্তানরা এসব থেকে বঞ্চিত। তাই প্রতিবছরই এই নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়।’
কেএমজে/এমআই