• শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪২৮
সফট টিস্যু ইনজুরি হলে কী করবেন

আঘাতপ্রাপ্ত অংশটি লাল হয়ে যায় এবং জায়গাটা গরম থাকে

সংগৃহীত ছবি

ফিচার

সফট টিস্যু ইনজুরি হলে কী করবেন

  • প্রকাশিত ১১ অক্টোবর ২০১৮

Dr. Shahadat

ডা. মো. শাহাদৎ হোসেন

হঠাৎ আঘাত পাওয়া মানেই হচ্ছে শরীরের বাইরের কোনো একটি জায়গায় অতিরিক্ত চাপ পড়া। এ ধরনের আঘাতে যে সমস্যা হয়, তাকে বলে সফট টিস্যু ইনজুরি। সফট টিস্যু ইনজুরি হলে কী হয়—আঘাতপ্রাপ্ত এলাকা ফুলে যায়। প্রচণ্ড ব্যথা হয়। আঘাতপ্রাপ্ত অংশটি লাল হয়ে যায় এবং জায়গাটা গরম থাকে। কোনো দুর্ঘটনায় আঘাত পাওয়া, খেলাধুলার সময় আঘাত পাওয়া, মাংসপেশিতে হঠাৎ টান লাগা কিংবা পা পিছলে পড়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে এই সফ্ট টিস্যু ইনজুরি হয়। তবে আঘাতের পরিমাণ যদি খুব বেশি হয়, তাহলে হাড় ভেঙে যেতে পারে।

এ অবস্থায় কী করবেন

এ পর্যায়ে আমরা রোগীকে ৬-৭ দিন পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে বলি। এখানে খেয়াল রাখতে হবে, যেন রোগী পুনরায় আঘাত না পায় এবং অবশ্যই পূর্ণ বিশ্রামে থাকে। সকাল-বিকাল বরফ ব্যবহার করতে হবে ১৫-২০ মিনিট করে। ভেজা গামছার ভেতর বরফ নিয়ে আক্রান্ত অংশে মুড়িয়ে দিন। যদি বেশি ঠাণ্ডা লাগে তিন মিনিট পর উঠিয়ে ফেলুন এবং শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে আবার একটানা ১২-১৪ মিনিট পেঁচিয়ে রাখুন। এবার ভালো লাগবে।  আক্রান্ত অংশ বালিশ বা অন্য কিছু দিয়ে উঁচু করে রাখুন যাতে হূৎপিণ্ড বরাবর থাকে। এ অবস্থায় হালকা ব্যায়াম, হালকা ম্যাসেজ, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে।

দ্বিতীয় ধাপ-এই ধাপকে রিপেয়ারিং স্টেজ বলে। এটির সময় ৭-২১ দিন। এ সময় ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা—

ডিপ ফ্রিকশন টেকনিক বিভিন্ন স্টেচিং এক্সারসাইজ থেরাপি, মাংসপেশি কন্ট্রাকশন এক্সারসাইজ এবং ব্যথা কমানোর জন্য ইলেকট্রো থেরাপি নেওয়া যেতে পারে। এই ধাপটি যদি আপনি সঠিকভাবে মেনে না চলেন, তাহলে আক্রান্ত অংশের মাংসপেশিতে স্কার বা অ্যাডহিশন বা দাগ পড়ে, যা রোগীকে দীর্ঘ সময় ব্যথায় ভোগায়।

তৃতীয় ধাপ— এই ধাপকে রিমডেলিং ধাপ বলে। এই ধাপটি ২১ দিন পর শুরু হয়। এই পর্যায়ের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রোগীকে পুরোপুরি সাপোর্ট দিয়ে পূর্বের অবস্থায় এবং কাজে ফিরিয়ে আনা। এই অবস্থায় একজন ফিজিওথেরাপিস্ট রোগীর আক্রান্ত অংশকে স্টেচিংসহ স্ট্রেংদেনিং এক্সারসাইজ করেন এবং জোরালোভাবে ডিপফ্লিকশন টেকনিক ব্যবহার করেন। এই সময় হিট থেরাপিও কিছু কাজে আসতে পারে।

এই সমস্যাটি বা ইনজুরিটি যদি কোমরে হয়, তাহলে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে-

·       হাঁচি অথবা কাশি দিতে গিয়ে কোমরে একটা ব্যথা হবে

·       একাধারে অনেক সময় বসে কাজ করলে কোমরে ব্যথা করবে এবং বসা থেকে ওঠার সময় কষ্ট হবে।

·       কোমরে অসহ্য ব্যথা হয় এবং পায়ে ছড়িয়ে যায়। অনেক সময় শুধু ব্যথা পায়েই অনুভূত হয়, কোমরে ব্যথা নাও হতে পারে।

·       হাঁটলে বা কাজ করলে ব্যথা বেশ বেড়ে যায়, রাতে ঘুমেরও ব্যাঘাত হতে পারে।

·       অনেক সময় রোগী পায়ে ঝিনঝিন, অবশ ভাব ও দুর্বলতা অনুভব করেন।

·       কিছু কিছু রোগীর কোমর একদিকে বেঁকে যায় এবং চিত হয়ে শুয়ে পা উঁচু করতে ব্যথা অনুভব হবে।

এসব সমস্যা দেখা দিলে আপনাকে অবশ্যই নিম্নের পরামর্শগুলো মেনে চলতে হবে-   

·       সম্পূর্ণ বিশ্রামে যেতে হবে এবং স্বাভাবিক ফার্ম বিছানা ব্যবহার করবেন।

·       বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপিষ্টের সঙ্গে অতিসত্বর যোগাযোগ করতে হবে।

·       ভারী জিনিস উত্তোলন নিষেধ এবং সাধারণ শারীরিক ব্যায়াম অবশ্যই বন্ধ থাকবে।

·       এ অবস্থায় অবশ্যই নরম খাবার খেতে হবে, যাতে কোষ্টকাঠিন্য না হয়।

লেখক : কন্সালট্যান্ট-পুপলার মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, ধানমন্ডি-২, ঢাকা।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads