• শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪২৮
শ্রেষ্ঠ জয়িতা ইতি ও মিনারার গল্প

বাম থেকে মিনারা বেগম ও ইতি রানী দাস

সংগৃহীত ছবি

ফিচার

শ্রেষ্ঠ জয়িতা ইতি ও মিনারার গল্প

  • প্রকাশিত ১৪ অক্টোবর ২০১৮

রফিক সরকার, কালীগঞ্জ (গাজীপুর)

সরকারের মহিলা অধিদফতরের উদ্যোগে ‘জয়িতা অন্বেষণ বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় গাজীপুর জেলায় ২০১৭-১৮ সালের জন্য পাঁচ ক্যাটাগরির মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলায় ‘ক’ ক্যাটাগরিতে ইতি রানী দাস ও ‘গ’ ক্যাটাগরিতে মিনারা বেগম শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন। উপজেলার শ্রেষ্ঠ ওই দুই জয়িতার গল্পটা একটু অন্যরকম। তারা জীবন-সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়ে প্রচণ্ড প্রতিকূলতা ও বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সাফল্যের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এখন নারীদের অনুসরণীয়। অতীতে তারা অনেক দুঃখ-কষ্ট ও অভাব-অনটন সহ্য করেও হতোদ্যম না হয়ে সাফল্যের গৌরবগাথায় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছেন। প্রতিকূল পরিবেশে সংগ্রাম করে তারা তাদের জীবনে সাফল্য এনেছেন।

‘ক’ ক্যাটাগরিতে ‘অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনকারী নারী’ হিসেবে জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলার বালীগাঁও গ্রামের ইতি রানী দাস। স্বামী নিরঞ্জন চন্দ্র দাস। আর্থিক সঙ্কটে পড়া স্বামীর সংসারের হাল ধরতে তিনি নিজ উদ্যোগে সেলাই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ঋণ নিয়ে একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করে বাসায় টেইলারিংয়ের কাজ করার পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করেন। নিজের ইচ্ছাশক্তি আর কঠোর পরিশ্রম করে ব্যবসা কাজের সম্প্রসারণের মাধ্যমে আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনেন এবং নিজ ব্যবসায় অন্য অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। তিনি নিজ কাজের পাশাপাশি এখন অন্য নারীদেরও কর্মক্ষম করে তুলেছেন। পাশাপাশি বাল্যবিয়ে রোধ, কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসচেতন এবং দুস্থ-অসহায় নারীদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।

‘গ’ ক্যাটাগরিতে ‘সফল জননী নারী’ হিসেবে জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন মিনারা বেগম। স্বামী মৃত সিদ্দিকুর রহমান। কালীগঞ্জ উপজেলার বালীগাঁও গ্রামে তার বাড়ি। বাবার হতদরিদ্র পরিবারে তারা ছিলেন চার বোন। লেখাপড়ার প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও চতুর্থ শ্রেণির পর তিনি লেখাপড়া করতে পারেননি। ১৯৭৩ সালে একজন মিল শ্রমিকের সঙ্গে তার বিয়ে হলেও স্বামীর সংসারে ছিল প্রবল অভাব-অনটন। স্বামীর সংসারে চারটি ছেলেসন্তান নিয়ে আরো বিপাকে পড়লেও তিনি হতোদ্যম হননি। বরং তিনি সংসার নামক মহাসমুদ্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যান। তাই স্বামীর পাশাপশি তিনি নিজেও একই মিলে সামান্য বেতনে চাকরি নিয়ে ছেলেদের পড়ার খরচ চালিয়ে যান। তার চেষ্টার কারণেই চার ছেলে মাস্টার্স পাস করে চাকরি করছেন। এখন তার সুখের সংসার। তিনি বাল্যবিয়ে রোধসহ পরিবার পরিকল্পনা, সন্তান লালন-পালন ও স্বাস্থ্য সচেতনতা মূলক কাজ করে যাচ্ছেন।

গাজীপুর জেলা মহিলাবিষয়ক অফিসার শাহানাজ আক্তার বলেন, ইতি রানী দাস ও মিনারা বেগম প্রতিকূল পরিবেশে সংগ্রাম করে জীবনে সাফল্য এনেছেন। আর এখন তারা নারী উন্নয়নে সমাজ তথা রাষ্ট্রের হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের উদ্যম ও সফলতায় সমাজের অন্য দশ নারীকে করছে অনুপ্রাণিত।

 

 

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads