বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে অন্যের সাহায্য নেওয়াটা সহজ হয়ে গেছে। সফল হওয়ার মোক্ষম উপায় বলে মনে করেন অনেকেই। আসলে কি তাই? ভেবে দেখবেন, অফিসে একটা কঠিন কাজ করতে দেওয়া হয়েছে আপনাকে। কাজটি করার অভিজ্ঞতা নেই আপনার। কী করবেন আপনি? এক ধরনের মানুষ সমস্যাটি সমাধানের জন্য অন্যের সাহায্য নেবেন। ইমেইল বা মেসেজের মাধ্যমে সহকর্মীর সঙ্গে আলোচনা করবেন কাজটি সমাধানের উপায় নিয়ে। অন্যদিকে আরেক ধরনের মানুষ কনফারেন্স রুমে একা বসে মাথা খাটিয়ে সমস্যাটির সমাধানের চেষ্টা করবেন। একেক জনের ক্ষেত্রে একেকটি উপায় কার্যকর। তবে প্রসিডিংস অব দা ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা উঠে এসেছে, এই দুটি পদ্ধতির কোনোটিই নয়; বরং দুটির মিশ্রণেই সবচেয়ে বেশি সাফল্য পাওয়া সম্ভব।
গবেষণার জন্য অংশগ্রহণকারীদের প্রথমে তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। একজন ব্যক্তি ২৫টি শহরে ভ্রমণ করবেন। তার জন্য সবচেয়ে সহজ রাস্তা খুঁজে দিতে বলা হয় এই তিনটি গ্রুপকে। প্রথম গ্রুপের সদস্যদের একাকী কাজ করতে বলা হয়। এই গ্রুপ থেকে কিছু সমাধান আসে যা খুবই ভালো। আবার কিছু সমাধান খুবই খারাপ। দ্বিতীয় গ্রুপের সদস্যদের বলা হয় একত্রে কাজ করতে। এখান থেকে আসা সমাধানগুলো সবই ভালো ছিল। কোনোটা খুব ভালো ছিল না, আবার কোনোটাই খুব খারাপ ছিল না। দেখা যায়, মোটামুটি ভালো একটা সমাধান পেলে সবাই সেটাকে কপি করতে থাকে। এ কারণে কারো সমাধানই খারাপ হয় না। কিন্তু অন্যকে কপি করা যাচ্ছে বলে কেউ তেমন একটা মাথা খাটান না। ফলে বেশি ভালো আইডিয়াগুলো আসে না। শেষ গ্রুপের সদস্যদের অল্প সময়ের জন্য একত্রে কাজ করতে দেওয়া হয়। বাকি সময়টা একাকী কাজ করতে বলা হয়। দেখা যায়, এ গ্রুপ থেকেই সবচেয়ে ভালো ফলাফল আসে। এ পদ্ধতিতে কেউ কাউকে পুরোপুরি কপি করতে পারেন না। নিজেরা মাথা খাটানোর সময় পান। পাশাপাশি অন্যদের সাহায্য পেয়েছে বলে ভালো সমাধান তৈরি করতে পেরেছেন।
ফলাফল হিসাব বিশ্লেষণে পাওয়া যায়, কিছু সময় সহকর্মীদের পরামর্শ নেওয়া ভালো কিন্তু পুরোপুরি নির্ভরশীল হওয়া যাবে না। অনেকেই দিনরাত যখন তখন ইমেইলের উত্তর দেন। এটাও ভালো নয়। নিজের চিন্তা-ভাবনার জন্য সময় রাখুন। এতে ক্যারিয়ারে উন্নতির পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও উন্নতি দেখা যাবে।