প্রকৃতি বৈচিত্র্যে ভরপুর। নানা রঙে রাঙানো আমাদের এই প্রকৃতি। রঙের ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা বৈচিত্র্য। এ কারণেই হয়তো পৃথিবী এত সুন্দর। প্রকৃতির এত রঙের বাহারের মধ্যে নীল রং সব জায়গাতেই আছে। কিন্তু আসলেই কি আছে?
যখন চারপাশে তাকাই, আকাশ ,সমুদ্র, পশু ,পাখির নীল রং দেখে মনে হতে পারে যে নীল রং প্রকৃতিতে খুবই প্রচলিত। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। প্রকৃতির প্রাণী ও উদ্ভিদের মধ্যে খুব কম সংখ্যকই আসলে নীল রঙের।
নীল প্রজাপতি বা পাখির পালকগুলোতে আমরা নীল রং দেখতে পাই।পালক বা প্রজাপতির ডানাগুলিতে আসল নীল রং থাকে না। প্রজাপতির পাখায় যদি কেমিক্যাল বা অ্যালকোহল দেওয়া হয় তাহলে নীল রঙের দেখা যাবে না। তাদের কাঠামো এমনভাবে সাজানো যে আলো ভাঙে এবং প্রতিফলিত হয়, যার ফলে আমাদের চোখে তা নীল দেখায়। ব্যতিক্রম obrina olivewing প্রজাপতি। বিবর্তনের কারণে এটি রঞ্জক হিসেবে নীল রঙের দেখা মিলে।
এবার ময়ূরের পেখমের দিকে লক্ষ্য করা যাক। বিভিন্ন কোণ থেকে আড়াআড়ি ভাবে দেখলে একে উজ্জ্বল দেখায়। অর্থাৎ তাদের কাঠামো এমনভাবে রয়েছে যে তা বিভিন্ন রঙের দেখায় । সূর্যের আলো তাদের শরীরের উপর পড়লে সেখান থেকে যেই রশ্মি প্রতিফলিত হয় তাই আমরা নীল রং হিসেবে দেখি। এটিকে বলা হয় "স্ট্রাকচারাল কালারিং"।
আরও একটি উদাহরণ হলো সমুদ্রের নীল রং। সমুদ্র নিজে নীল নয়, কিন্তু পানি সূর্যের আলো শোষণ করে এবং লাল ও সবুজ আলোর তুলনায় নীল আলো বেশি প্রতিফলিত হয়, তাই সমুদ্রকে নীল দেখায়। আকাশের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার ঘটে। বায়ুমণ্ডল নীল আলোর ছোট ছোট কণাগুলো ছড়িয়ে দেয়, ফলে আকাশ নীল দেখায়।
কাঠামোগত কারণে মানুষের চোখ নীল দেখায়। অর্থাৎ এখানেও রঞ্জক হিসেবে নীল রং নেই। এছাড়া, প্রাণীদের মধ্যে নীল রং কম দেখতে পাওয়া যায় কারণ বিবর্তনের ক্ষেত্রে নীল রং সহজলভ্য নয়। নীল রঙের জন্তু যেমন নীল মাকড়সা বা নীল ব্যাঙও বিরল ।মূলত এদের নির্দিষ্ট পরিবেশে দেখা যায় যেখানে তাদের এই রং বেঁচে থাকার জন্য সহায়ক।
টিএ/এমআই/এনআর/