ছবি : সংগৃহীত
প্রতিবছর শীতকালে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে পরিযায়ী পাখিরা আমাদের দেশে আসে। এই পাখিরা হাজার হাজার মাইল পথ অতিক্রম করে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। মূলত খাবারের অভাব কিংবা প্রজননের সমস্যার মতো নানা কারণেই তাদের এই ‘অনন্ত’ সফর। তবে সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, এই পাখিরা কীভাবে এত দীর্ঘ পথ চিনে আসে?
পরিযায়ী পাখিদের অসাধারণ এই যাত্রাপথের রহস্য উদঘাটন করতে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়েছেন। গবেষণায় ওঠে এসেছে বেশকিছু বিস্ময়কর তথ্য। চলুন জেনে নেওয়া যাক—
অভ্যন্তরীণ নেভিগেশন সিস্টেম
পাখিদের শরীরে একটি প্রাকৃতিক নেভিগেশন সিস্টেম রয়েছে, যা তাদের পথ চিনতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস ,পাখিদের মধ্যে একটি প্রাকৃতিক কম্পাস রয়েছে, যা তাদের সঠিক দিক নির্দেশ করতে সক্ষম। পাখিরা সূর্য, চাঁদ, তারকা এবং পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সাহায্যে দিক নির্ধারণ করে। তারা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের পরিবর্তন অনুভব করতে সক্ষম। এটি প্রাকৃতিক ‘জিপিএস সিস্টেম’ হিসেবে তাদের দিক নির্দেশে সহায়তার কাজ করে।
পরিযায়ী পাখিরা পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা ও স্মৃতি ব্যবহার করে তাদের পথ চিনে নেয়
পূর্বপুরুষের অভিজ্ঞতা এবং স্মৃতি
পরিযায়ী পাখিরা পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা ও স্মৃতি ব্যবহার করে তাদের পথ চিনে নেয়। সাধারণত তারা তাদের পূর্বপুরুষদের পথেই ওড়ে। এটি তাদের জন্য একটি পরিচিত পথ। এছাড়া নতুন পাখিরা অভিজ্ঞ পাখিদের অনুসরণ করে। ফলে তাদের যাত্রা নিরাপদ এবং সঠিক হয়ে ওঠে।
আবহাওয়ার পরিবর্তন
পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন পাখিদের অভিবাসন পথ এবং সময়সূচির ওপর প্রভাব ফেলছে। পাখিরা আবহাওয়ার পরিবর্তন লক্ষ্য করে তাদের যাত্রার সময় নির্ধারণ করে, যাতে তারা পর্যাপ্ত খাবার এবং আশ্রয়ের সুবিধা পায়। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের তাপমাত্রা এবং আবহাওয়া পরিস্থিতি পাখিদের অভিবাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ফ্লক ফ্লাইং কৌশল
পাখিরা একসঙ্গে দলবদ্ধ হয়ে ওড়ে, যা ‘ফ্লক ফ্লাইং’ নামে পরিচিত। এতে তারা একে অপরের কাছ থেকে সঠিক দিক নির্দেশনা পায় এবং একই সঙ্গে তাদের গতি নিয়ন্ত্রণে থাকে। এর ফলে তারা ক্লান্তি কম অনুভব করে এবং দ্রুততার সঙ্গে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। এই কৌশল তাদের অভিবাসন যাত্রা আরও নিরাপদ এবং সঠিক করে তোলে।
এটিআর/