ডালিম (প্যামেগ্রানেট) একটি অতি পুষ্টিকর ফল। এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শতাব্দী প্রাচীন এই ফলটি নানা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রদান করে এবং আমাদের দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা ও হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়। আসুন, জেনে নিই ডালিমে থাকা গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানগুলো সম্পর্কে।
ভিটামিন সি : ডালিমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে, যা ত্বককে উজ্জ্বল রাখে এবং বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করে।
ফাইবার : ডালিমে অনেক ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়ক। এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
পটাশিয়াম : ডালিমে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। এটি সেলুলার কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ভিটামিন কে : ডালিমে ভিটামিন কে থাকে। এই ভিটামিনটি হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়ক। এটি শরীরের প্রাকৃতিক কোয়া কনভার্সন প্রক্রিয়া সক্রিয় রাখে।
আয়রন : ডালিমে আয়রন থাকে, যা রক্তের হিমোগ্লোবিনের স্তর বাড়ায় এবং শরীরের এনার্জি বাড়াতে সহায়তা করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস : ডালিমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস কোষের ক্ষতি প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং শরীরকে প্রদাহ থেকে মুক্ত রাখে। এটি ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
ফলিক অ্যাসিড: গর্ভাবস্থায় এই ফলিক অ্যাসিড মা এবং শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করে এবং গর্ভাবস্থায় সম্ভাব্য সমস্যা কমাতে পারে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে : সুস্থ থাকার জন্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। কারণ আমাদের রক্তচাপ বেশি বা কম হয়ে গেলে সেখান থেকে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিয়মিত ডালিম খেলে তা আপনাকে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। ফলস্বরূপ স্বাভাবিক হবে রক্তচাপ।
হাড়ের ব্যথা দূর করে : যারা হাড়ের ব্যথায় ভুগছেন তারা নিয়মিত ডালিম খেলে উপকার পাবেন। কারণ ডালিমে থাকা বিভিন্ন উপকারী উপাদান আথ্রাইটিস ও হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথা দূর করতে কাজ করে। সেইসঙ্গে এটি হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথা হলে তাও উপশম করতে সাহায্য করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় : হৃদরোগের আশঙ্কা থেকে দূরে থাকতে চাইলে নিয়মিত ডালিম খেতে পারেন। এই ফল আপনার শরীরের কোলস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে শরীরে রক্তচলাচল বৃদ্ধি পায়। এতে দূরে থাকে হৃদরোগের ঝুঁকি।
স্মৃতিশক্তি বাড়ায় : যারা ভুলে যাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত ডালিম খেলে উপকার পাবেন। কারণ উপকারী এই ফল আপনার স্মৃতিশক্তি বা মনে রাখার ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করবে। অ্যালঝেইমার্সের রোগীদের জন্য এটি বিশেষ উপকারী ফল। শিশুর খাবারের তালিকায়ও রাখতে পারেন ডালিম।
রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায় : রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে কাজ করে ডালিম। এতে থাকে অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান যা এই কাজে সাহায্য করে। ফলে দূর হয় রক্তশূন্যতাসহ রক্তের অন্যান্য অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ভয়।
ডায়াবেটিসে উপকারী : মিষ্টি ফল হলেও ডালিম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী। বিশেষজ্ঞরা এই ফলকে প্রাকৃতিক ইনসুলিন হিসেবেও বলে থাকেন। তাই ডায়াবেটিস হলেও নিশ্চিন্তে এই ফল খেতে পারবেন। তবে এ ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে খাবার খাওয়া উত্তম।
এমজে