কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এটি সত্য যে করোনাভাইরাস আমাদের আগ্রগতিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও, আমাদের কৃষিক্ষেত্রে অগ্রগতি অব্যাহত ধরে রাখতে হবে যাতে আমাদের জনগণ অন্তত খাদ্য ঘাটতিতে না ভোগেন। সেদিকে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে।’
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) কার্যনির্বাহী সভার সাপ্তাহিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সভায় যোগ দেন। একনেকের অন্য সদস্যরা রাজধানীর এনইসি ভবন থেকে যুক্ত ছিলেন।
কৃষিক্ষেত্রে সরকারের সহায়তার বর্ণনা দিয়ে হাসিনা বলেন, ‘আমরা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, সরকার সারের দাম কমিয়েছে এবং মানসম্পন্ন বীজ এবং অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিতরণ করছে। সরকার কৃষির যন্ত্রপাতি পেতে ২ কোটি কৃষি কার্ড সরবরাহ করেছে এবং কৃষকদের জন্য ১০ টাকায় একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এখন এক কোটিরও বেশি কৃষকের এমন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে।
বিএনপি সরকারের আমলে ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সারের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৯০ টাকা, তার সরকার বিভিন্ন পর্যায়ে দাম কমিয়ে দিয়েছে এবং এখন কৃষকরা তা কেজিপ্রতি ১২ টাকায় পাচ্ছেন, যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আমরা যদি আমাদের বাড়িতে খাবার রাখতে পারি, তবে আমাদের অন্যান্য ফ্রন্টে এত গুরুতর সমস্যা নাও হতে পারে। আমরা (করোনাভাইরাস সংকট) কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হব।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংস্থা- ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা কোভিড-১৯ এর মধ্যে ধান কাটতে কৃষকদের পাশে এসেছেন। ‘ফসল কাটার কাজে যোগ দিয়ে অনেক নেতা-কর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে কয়েকজন মারা গেছে।’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন,‘আমি বলতে চাই মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য।’
২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়নের এজেন্ডা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পক্ষে বিশেষত কার্যকর যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা অর্জনে সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এসডিজি) অনুসরণ করতে থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এসডিজিও অর্জন করতে হবে, বিশেষ করে আমাদের দেশের জন্য কার্যকর ১৭ টি লক্ষ্য। আমাদের সবগুলো নিয়ে কাজ করার দরকার নেই।’
শেখ হাসিনা বলেন, যে লক্ষ্যগুলো বাংলাদেশের পক্ষে কার্যকর তা ইতোমধ্যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং সরকার লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে। ‘আমরা তা (এসডিজি) অর্জন করতে সক্ষম হব।’