জবি শিক্ষার্থীকে মারধর, গাবতলী পরিবহনের ১০ বাস আটক

জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ১৪:৫১

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় গাবতলী লিংক (প্রা.) লিমিটেডের ১০টি বাস ক্যাম্পাসে নিয়ে এসে আটকে রেখেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম কিরণ কুমার রবিদাস । তিনি ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী।
বুধবার (১৯ মার্চ) সকালে যাত্রাবাড়ী থেকে বাসগুলো নিয়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইন্স ফ্যাকাল্টির সামনে আটকে রেখে দেন তারা।
জানা যায়, গুলিস্তান থেকে কল্যাণপুর বাসস্টান্ড যাওয়ার জন্যে ৮ নম্বর গাবতলী বাসে ওঠেন রবিদাস। কিন্তু যথাসময়ে বাস না ছাড়া এবং ইফতারের সময় হয়ে আসায় বাস কন্ডাক্টর ও হেলপারের সাথে বাকবিতণ্ডা হয় একাধিক যাত্রীর। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথেও একপর্যায়ে হাতাহাতি হয় বাস ড্রাইভারের। পরবর্তিতে বাস ছেড়ে দিলে একে একে সবাই নেমে গেলেও কল্যাণপুরে নামতে দেওয়া হয়নি রবিদাসকে। বাসে তাকে আটকে রেখে গালিগালাজ, ডাবলভাড়া নেওয়া ও বাস স্টাফদের জড়ো করে মারধর করা হয়। প্রাণ বাঁচানোর জন্য একটা বাইকে করে সেখান থেকে তিনি পালিয়ে আসেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দুইদিন আগে জগন্নাথের নারী শিক্ষার্থীকে ভিক্টর ক্লাসিকের বাসে হেনস্তা করা হয়। দিন পার না হতেই আরেক বাসে মারধর করা হয় আরেক জবি শিক্ষার্থীকে। ভিক্টর ক্লাসিককে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গাবতলী বাসের লোকজন সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। আমাদের ভাই-বোনদের সাথে যাতে অন্তত কোনো বাস চোখ তুলে তাকাতে না পারে তার ব্যবস্থা করব। বিচার না করা পর্যন্ত এই বাসগুলো এখান থেকে এক পা সরবে না।’
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কিরণ কুমার রবিদাস বলেন, ‘আমি অন্যান্য যাত্রীদের মতোই শুধুমাত্র যথাসময়ে বাস ছাড়ার কথা বলেছি। কিন্তু আমকে আলাদাভাবে আটকে রেখে মারধর করে। আমি নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও আমাকে তারা মারল। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন, তারা যেন সুষ্ঠু বিচার করে।’
এ বিষয়ে গাবতলী লিংক (প্রা.) লিমিটেডের বাসের এক হেলপার বলেন, ‘আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা দেখি। আমাদের স্টাফদের মধ্যে যারা এই কাজ করেছে, তারা বড় ধরনের অপরাধ করেছে। তাদের মোটেও এটা করা উচিত হয়নি। আমাদের বাস মালিক পক্ষ আসছে, তারা এসেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলবে। আমরা সুষ্ঠু সমাধান চাই।’
গাবতলী লিংক (প্রা.) লিমিটেডের এমডি রুবেল বলেন, ‘আমরা গতকাল (মঙ্গলবার) রাতেই এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। এমন একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যাবে আমরা আসলে বুঝিনি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বসে যত দ্রুত সম্ভব এটির সুষ্ঠু সমাধান করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. এ কে এম রিফাত হাসান বলেন, ‘ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এখনো আমাদের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রশাসন থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে একাধিকবার ফোন করলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
জেএন/এমজে