জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার দাবি
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি, জবি
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:০৮
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম ব্যাচের (২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ) ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে নেতাকর্মীরা বলেন, ২৪-এর জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে নতুন ধারার রাজনীতির সূচনা হয়েছে। সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্রদলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এই লক্ষ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সমগ্র বাংলাদেশে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে ৩১ দফার প্রচারণা ও শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। ছাত্রদল হবে নতুন বাংলাদেশের ছাত্র প্রতিনিধি।
কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পরে সিনিয়র থেকে জুনিয়র পর্যায়ের সকল ত্যাগী ও হামলা-মামলার শিকার নেতাকর্মীদের পদবঞ্চিত করে অছাত্র, ছাত্রলীগের কর্মীদের দ্বারা এবং বিপ্লবোত্তর সময়ে রাজনীতিতে আসা হাইব্রিডদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের লড়াই-সংগ্রামে যারা জীবন বাজি রেখেছেন তাদেরকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে নেতাকর্মীরা বলেন, বিশেষ করে ১১তম ব্যাচকে (২০১৫-১৬ সেশন) ইচ্ছাকৃতভাবে পদবঞ্চিত করা হয়েছে। পতিত স্বৈরাচার হাসিনার সরকারের আমলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের সকল কার্যক্রম, হরতাল-অবরোধ সমাবেশসহ সকল প্রোগ্রামের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ১১তম আবর্তনের। রাজপথের সকল আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণের পাশাপাশি ক্যাম্পাস রাজনীতিতে ১১ ব্যাচ ছিল সম্মুখবাদী।
১১ ব্যাচের নেতাকর্মীরা আরও বলেন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্তৃক তৎকালীন সময়ে ব্যাপক হামলা মামলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তথাপিও ২৪ ডিসেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে সেখানে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষকে বাদ দিয়ে তারা যে মাইনাসের রাজনীতি কায়েম করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে তা অত্যন্ত ঘৃণিত কর্মকাণ্ড ও ন্যক্কারজনক।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ১১তম ব্যাচের অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সোনালী সময় বন্ধু-বান্ধব শিক্ষার্থী সহপাঠীদের সাথে উপভোগ করে কাটাতে পারেনি। অধিকাংশই লুকিয়ে ক্লাস করেছেন। ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে এ বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সকল আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের এই নেতাকর্মীরা সম্মুখ সারিতে থেকে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে গেছে।
অনতিবিলম্বে সদ্য ঘোষিত অনিয়মের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে অংশগ্রহণমূলক, বুদ্ধিভিত্তিক, মেধা ও পরিশ্রমের মূল্যায়নের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলকে সু-সংগঠিত করার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ২০১৬ সাল থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সকল মিথ্যা মামলার হাজিরা, এমনকি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার দিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ১১তম আবর্তনের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে যে পরিচিত মুখগুলো রাজপথে ছিল তাদেরকে আজ যেভাবে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে তা সত্যি দুঃখজনক। যা তরুণ প্রজন্মকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পতাকাতলে আসতে নিরুৎসাহিত করবে বলে আমরা মনে করছি।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস শুকুর আইমান, স্বাস্থ্য সম্পাদক মো রায়হান হোসেন অপু, যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক সাইফ শাহিন, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদ চৌধুরী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সোলাইমান খান সাগর, ছাত্রনেতা ইমরান হোসাইন, বাবলী আক্তার সাথী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জান্নাতুন নাইম/ওএফ