ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দিবাগত সাড়ে ১১টার দিকে রাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দ্রুত ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে এই প্রতিবাদী মিছিল শুরু করে।

জানা গেছে, ঢাবির সিনেট ভবনের সামনে বৃহস্পতিবার সন্ধায় সিন্ডিকেট মিটিংয়ে আওয়ামীপন্থী তিন সদস্যকে নিমন্ত্রণ এবং সিন্ডিকেটে ডাকসুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ খানের সাথে ছাত্রদলের বাকবিতণ্ডার অভিযোগ উঠেছে। 

এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় ঢাবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল ও মুহসিন হল হয়ে ভিসি চত্বরে এসে শেষ হয়। এখানেই একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।

এ শিক্ষার্থীরা ‘এক দুই তিন চার, ডাকসু আমার অধিকার’; ‘টেম্পু না ডাকসু, ডাকসু ডাকসু’; ‘কবরস্থান না ডাকসু, ডাকসু ডাকসু’; ‘চাঁদাবাজ না ডাকসু-ডাকসু ডাকসু’; ‘সন্ত্রাস না ডাকসু, ডাকসু ডাকসু’; ‘গেস্ট রুম না ডাকসু, ডাকসু ডাকসু’; ‘গণরুম না ডাকসু, ডাকসু ডাকসু’; ‘চাঁদাবাজের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী বলেন, ছাত্রলীগের আমলে পাতানো নির্বাচনের পরেও শিক্ষার্থীরা গণরুম-গেস্টরুম থেকে সাময়িক স্বস্তি পেয়েছিল। শিক্ষার্থীরা সাময়িকভাবে হলেও গণতন্ত্রের স্বাদ পেয়েছিল। আমরা যখন বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদ বিদায় করেছি তখন অন্য একদল আমাদেরকে সেই গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে। বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে আবার সেই গণরুম গেস্ট রুম ফিরিয়ে আনার জন্য।

তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশে বলেন, আমরা মুসলিম লীগের ছাত্র সংগঠন এনএসএফকে বিদায় করেছি; এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় ছাত্র সমাজের কবর রচিত হয়েছে; এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মতো দানবের কবর রচিত হয়েছে; যদি ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যায়- তাহলে এই ক্যাম্পাসে ছাত্রদলেরও কবর রচিত হবে।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাহিন সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান।

মাহিন সরকার বলেন, উপাচার্য স্যার শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি। তাকে অপমান করার মাধ্যমে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের অপমান করেছে। বর্তমান প্রশাসন ডাকসু নির্বাচনের পক্ষে কথা বলার পর থেকেই ছাত্রদল এবং অন্যান্য যারা ষড়যন্ত্রকারীরা কথা বলা শুরু করেছে।

তিনি বলেন, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে উপাচার্য স্যারকে মেরুদণ্ড সোজা রেখে ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। তার সময়সীমা মাত্র ৭২ ঘণ্টা। যদি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রোডম্যাপ ঘোষণা না হয় তাহলে কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচিতে যাব।

ওএফ