Logo

ক্যাম্পাস

রাবিতে কোরআন পোড়াল দুর্বৃত্তরা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

Icon

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৩২

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তিনটি আবাসিক হলে পবিত্র কোরআন শরিফ পোড়ানোর ঘটনায় ক্যাম্পাসে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। রোববার (১২ জানুয়ারি) সকালে প্রথমে শহীদ জিয়াউর রহমান হলের মসজিদে, পরে সৈয়দ আমীর আলী হলের মুক্তমঞ্চে এবং মতিহার হলের মুক্তমঞ্চে কোরআন পোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করেন। 

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য করা হয়েছে। সৈয়দ আমীর আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফিরোজ হাসান বলেন, ‘এটি ইচ্ছাকৃত উসকানিমূলক ঘটনা। কোনো একটি দল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কাজটি করেছে।’

ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দ্রুত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সৈয়দ আমীর আলী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুনর রশীদ বলেন, ‘এই ধরনের ধর্মীয় অবমাননাকে আমরা কোনোভাবেই সহ্য করব না। ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা চাই দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘এটি একটি ঘৃণিত কাজ। আমরা তদন্তে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাকে যুক্ত করেছি।’

এদিকে, কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় প্রতিবাদ জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রোববার বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। শিক্ষার্থীরা ‘আল কোরআনের অপমান, সইবে নারে মুসলমান’, ‘আল কুরআনে আগুন দাওনি, দিয়েছ মুসলিমদের কলিজায়’, ‘জান দিবো তাও কোরআনের অবমাননা সইব না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে কোনো পক্ষ।’ শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘কোরআন মাজিদ পৃথিবীর একমাত্র নির্ভুল পবিত্র গ্রন্থ। এর প্রতি আঘাত করা মানে মুসলমানদের কলিজায় আঘাত করা।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, ‘এটি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্র। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের ফাঁদে পা না দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে একত্রিত হয়েছে।’

বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শের বাইরে এসে একত্রে প্রতিবাদ করেছেন। ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনও এ আন্দোলনে অংশ নেয়। তারা বলেন, ‘আমরা আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিকে সম্মানিত করার জন্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য একত্রিত হয়েছি।’

জানা গেছে, শহীদ হবিবুর রহমান হলের মসজিদ থেকে কিছু পোড়ানো কোরআনের পাতা উদ্ধার করা হয়। শহীদ জিয়াউর রহমান হলের দেয়ালে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) লোগো আঁকা হয়েছিল। এসব ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। তবে প্রশাসন এখনো ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করতে পারেনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এই ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাও কাজ করছে। তারা দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিয়েছে।

এমজে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর