Logo

ক্যাম্পাস

মাদকবিরোধী সেমিনারে বক্তারা

‘ধনী পরিবারের সন্তানরাই বেশি মাদকাসক্ত’

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:৩০

‘ধনী পরিবারের সন্তানরাই বেশি মাদকাসক্ত’

‘মাদকাসক্তি আধুনিক সভ্যতার বিপজ্জনক রোগ। এইডস, ক্যানসর ও হৃদরোগের মতো মাদকাসক্তিও ভয়াবহ রোগ। এটি পারমাণবিক বোমার চেয়েও ক্ষতিকর। বিশেষ করে ধনী পরিবারের অতি আদরের সন্তানরাই বেশি মাদকাসক্ত।’ 

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস মিলনায়তনে ‘মাদকাসক্তি ও মাদক প্রতিরোধে তরুণ সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব বলেন। 

ড্রিম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সেমিনারের সার্বিক সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ ও বিজনেস ক্লাব।

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (গোয়েন্দা) খোরশেদ চঞ্চল, মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী, ড্রিম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের (ডি.বি.এফ) প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রাখিল খন্দকার নিশান, সমাজসেবক ও ডিসকভারি চ্যানেল খ্যাত হিউম্যান সিদ্ধাচার্য মার্ক ইউরি বজ্রমুনি এবং ইন্সটিটিউট অব ওয়েলবিয়িং বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক দেবরা ইফরইমসন। 

স্বাগত বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুল হক (অব.)। সেমিনারটি পরিচালনা করেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জুয়াইরিয়া জাহান শায়মা, নাফিসুল হোসেন সতেজ।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (গোয়েন্দা) খোরশেদ চঞ্চল বলেন, ‘মাদকাসক্তি আধুনিক সভ্যতার বিপদজনক রোগ। মাদকের ভয়াল থাবায় ধ্বংসের পথে তরুণ প্রজন্ম। শহর থেকে গ্রাম, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্রই মাদক পাওয়া যাচ্ছে হাতের নাগালে। মাদকের কারণে বেড়ে যাচ্ছে সামাজিক অবক্ষয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘তরুণ সমাজ হারিয়ে ফেলছে তাদের নৈতিক মূল্যবোধ। এই ভয়াল মাদকের কারণে ভেঙে যাচ্ছে পারিবারিক বন্ধন, নষ্ট হচ্ছে আস্থা-বিশ্বাস, পরিবার ও সমাজে তৈরি হচ্ছে নতুন আতঙ্ক।’

মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, ‘মাদকাসক্তি একটি বহুমাত্রিক জটিল সমস্যা। এ ব্যাধি দূর করতে দরকার সমন্বিত কর্ম প্রয়াস। দেশের উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের একটি বড় অংশ ইয়াবা ও আইস আসক্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ধনী পরিবারের অতি আদরের সন্তানরাই বেশি মাদকাসক্ত।’

তিনি বলেন, ‘শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাই নয়, বর্তমানে কলেজ-স্কুলেও মাদক ঢুকে পড়েছে। সমন্বিত সামাজিক প্রতিরোধ ছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।’

সেমিনারে বক্তারা বলেন, ‘দেশের প্রায় ৭০ লাখ মানুষ বর্তমানে মাদক সেবন করেন যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। যা বাংলাদেশের মোট বাজেটের প্রায় এক চতুর্থাংশ এবং উন্নয়ন বাজেটের ৫৬ শতাংশ।’

তারা আরও বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে পারমানবিক মারণান্ত্ররের চেয়েও ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে মাদক। যা প্রতিনিয়ত ধ্বংস করে দিচ্ছে আমাদের যুব সমাজকে। অকালে ঝড়ে যাচ্ছে অসংখ্য তাজা প্রাণ। দাম্পত্য জীবনের কলহের জের ধরে ভেঙে যাচ্ছে অসংখ্য সুখের সংসার। নেশার করাল গ্রাসে ধুঁকে ধুঁকে মরছে লক্ষ-কোটি তাজা পান। ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র। রাজধানী থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সর্বনাশা এই মাদক দাবানলের ন্যায় ছড়িয়ে পড়ছে।’

সভাপতির বক্তব্যে বিইউ’র ভারপ্রাপ্ত উপাচর্য বলেন, ‘বর্তমানে বিইউ পরিবারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো মাদকাসক্তি থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া। বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদকমুক্ত রাখার জন্য এর কর্মকাণ্ড যত বিস্তৃত করা যাবে ততই আমাদের মঙ্গল।’

মাদক ও ধুমপানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘ইতোমধ্যে বিইউ’কে ধুমপানমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।’

এমজে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর