চার দাবিতে প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কুবি শিক্ষার্থীদের
কুবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৯
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ সবুজকে অপহরণের ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এরই প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ চারদফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশন বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য বরাবর এই স্মারকলিপি দেন একদল শিক্ষার্থী।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ সবুজকে অপহরণ করা হয়। এ সময় তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয় এবং মুক্তিপণের জন্য তার পরিবারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়।
পরবর্তীতে পুলিশ ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায়, টানা পাঁচ ঘণ্টার অভিযান শেষে কুমিল্লা শহরের একটি দোকান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি।
স্মারকলিপিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ৪ টি দাবি প্রস্তাব করা হয়।
দাবিগুলো হলো,
১. শহরে আসা-যাওয়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বিপদে পড়া শিক্ষার্থীদের তৎক্ষণাৎ সাহায্য করার জন্য 'র্যাপিড একশন সেল' গঠন করতে হবে।
২. ছাত্রদের বিভিন্ন সমস্যায় (যেমন : ছিনতাই, অপহরণ ইত্যাদি) প্রশাসনের বাদী হয়ে মামলা করতে হবে।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে থাকা পার্ক বা পিকনিক স্পটে আসা বাস বা গাড়িগুলো ক্যাম্পাস এবং আশেপাশের এলাকায় বেপরোয়া আচরণ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় প্রশাসনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, স্পিডব্রেকারের ব্যবস্থা করা এবং শিক্ষার্থীরা যাতে দুর্ঘটনার শিকার না হয় সে ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যৌথ উদ্যোগে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া।
৪. ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে বহিরাগতদের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
এ বিষয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুহসিন জামিল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আজকে আমরা স্মারকলিপি প্রদান করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে এবং কুমিল্লা শহরে যাতায়াতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের দায়িত্ব। সবুজের সাথে যা ঘটেছে, যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারত।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক মেয়ে শিক্ষার্থী শহরে টিউশনি করেন, যেকোনো ধরনের ঘটনাই ঘটতে পারে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ও মেয়ে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ নন, অনেক সময় তাদেরকে হেনস্তার স্বীকার হতে হয়। তাই সব বিষয় কনসার্নে রেখে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, ‘আমরা স্মারকলিপি হাতে পেয়েছি। শিক্ষার্থীদের যে দাবি, তা যৌক্তিক। আমরা এ নিয়ে প্রশাসনিকভাবে বসব। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘আমরা স্মারকলিপি পেয়েছি। এটা নিয়ে আমরা আলোচনায় বসব। নিরাপত্তা তো আসলে একা দেওয়া যাবে না, এর জন্য একটা প্রশাসনিক বডি রয়েছে। সকালে সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
ইমতিয়াজ রিফাত/এমজে