গণযুদ্ধের ডাক দিয়ে সর্বহারা পার্টির পোস্টার

জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:০০

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) রাতের আঁধারে বামপন্থী সশস্ত্র গুপ্ত সংগঠন পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টির পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ভবনের পেছনে কলা ও মানবিক অনুষদের এক্সটেনশন ভবনের জন্য নির্ধারণ করা স্থানের টিনের দেয়ালে এসব পোস্টার দেখা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে এ পোস্টারগুলো দেখা যাচ্ছে। তবে কে বা কারা পোস্টার সাঁটিয়েছেন, তা জানা যায়নি। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিনে গিয়েও দুই ধরনের মোট ৮টি পোস্টার দেখা গেছে।
প্রথম পোস্টারে লেখা ছিল, ‘দুনিয়ার সর্বহারা ও নিপীড়িত জাতি, জনগণ এক হও! ২ জানুয়ারি ২০২৫ পার্টি-প্রতিষ্ঠাতা ও মহান নেতা কমরেড সিরাজ সিকদার এর-৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করুন। কমরেড সিরাজ সিকদারের বিপ্লবী ঐতিহ্যকে ভিত্তি করুন! তাঁর দুর্বলতা ও ত্রুটিকে অতিক্রম করুন! গ্রামাঞ্চল, কৃষি-বিপ্লব ও গণযুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিপ্লবী রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে চলুন। মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওবাদ-জিন্দাবাদ!’
এছাড়া অপর পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘‘সর্বহারা পার্টির ৫ম জাতীয় কংগ্রেস ২০২৪-এর ডাক, মার্কন পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের দালাল ও সেনা-এনজিও-বুদ্ধিজীবী-বড় ধনীদের ‘অন্তর্বতী সরকার’ শ্রমিক-কৃষক-সাধারণ জনগণের সরকার নয়, বিপ্লবী গণক্ষমতা প্রতিষ্ঠার লড়াই অব্যাহত রাখা মাওবাদীগণ, ঐক্যবদ্ধ হোন! পূর্ববাংলার মাওবাদী আন্দোলনের পাঁচ দশক অভিজ্ঞতার সারসংকলন করুন! গ্রামভিত্তিক গণযুদ্ধ গড়ে তুলুন। মার্কিন, চীন, রশিয়া, ইইউসহ সব সাম্রাজ্যবাদ-নিপাত যাক! ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ-নিপাত যাক! মাওবাদ-জিন্দাবাদ। নয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব-জিন্দাবাদ, গণযুদ্ধ-জিন্দাবাদ।’’
পোস্টারিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘আমরা পোস্টারের বিষয়ে অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।’
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে গোয়েন্দা ব্যবস্থা জোরদারের বিষয়ে কথা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি একটি মাওবাদী রাজনৈতিক দল। এটি ১৯৬৮-৬৯ সালে সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়। সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে চায় তারা। স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে ও পরে দলটি গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে কার্যক্রম চালায়। তবে ১৯৭৫ সালের পর বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে গোপনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে এই পার্টি ।
শাহরিয়ার আলম/এটিআর