কুয়েটে হামলার প্রতিবাদে বুয়েট-ঢাবিতে বিক্ষোভ

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:০৭

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বুয়েট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
বুয়েটের বিক্ষোভ মিছিলটি পলাশী হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের পাশ দিয়ে বকশিবাজার মোড় ঘুরে পুনরায় বুয়েট শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়। এর পরপরই ঢাবি থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
সমাবেশে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা বলেন, আজ কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্তৃক ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জ্ঞাপন করছি। কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্রদল নিজেদের ফর্ম বিক্রির কার্যক্রম চালায়। এর প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করতে চাইলে সেখানে ন্যাক্কারজনকভাবে নৃশংস হামলা চালায় বহিরাগত ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা।
বিকেলও কুয়েটে আমাদের ভাইয়েরা একের পর এক হামলার স্বীকার হয়েছেন। আমরা বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা পরিষ্কার কণ্ঠে ঘোষণা করতে চাই, বাংলাদেশকে আরেকটি নৈরাজ্যপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত হতে আমরা দেব না। হাজারো শহীদের রক্তস্নাত এই ফ্যাসিস্টমুক্ত স্বাধীনদেশে ফ্যাসিস্টদের পুরনো পদচারণা আমরা মেনে নেব না।
হামলাকারীদের বিচার চেয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, কুয়েটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা একান্তই কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের, কোনো বহিরাগত সন্ত্রাসীরা না। ইতোপূর্বে বুয়েটে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যেমন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছিল, ছাত্রদলের বর্তমান সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধেও বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের অবস্থান অনঢ় ও সুদৃঢ়।
এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ঢাবির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি ভিসি চত্বরের দিকে যায়। এর আগে একটি সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। পরে বিক্ষোভ মিছিলে সংগঠনটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ যোগ দেন।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি নির্মম নির্যাতন ও নিপীড়ন আবার ফেরত এসেছে। ছাত্রলীগের স্টাইলে হামলাকে জায়েজ করছে অনেকে। ৫ আগষ্টের পরে আমরা আর জাহেলি আমলে ফেরত যেতে চাই না। যারা আবার ছাত্রলীগের মতো হতে চাইবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা দাঁড়াব।
তিনি আরো বলেন, এ দেশে স্ট্যাম্প ও লাঠির রাজনীতি চলবে না। প্রয়োজনে আমরা আবার একটি জুলাই বরণ করতে প্রস্তুত আছি।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক জাকির হোসেন মঞ্জু বলেন, আবার যদি কেউ ছাত্রলীগের মতো ফিরে আসতে চায়, আর যদি কেউ আমাদের ভাইদের উপরে হামলা করে তবে আমরা বরদাশত করব না। তাদেরকে প্রতিহত করতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আবার রাজপথে নামবে। নতুন বাংলাদেশে ছাত্রলীগের স্টাইল ও ফ্যাসিবাদী কায়দায় হামলা চলবে না।
এদিকে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদসহ কয়েকটি ছাত্র সংগঠন।
- ওএফ