নারী-শিশুর অধিকারের দাবিতে মানববন্ধন

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৫, ১১:০০
-67ca7d7f3a3d0.jpg)
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন–নারী ও কন্যার উন্নয়ন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আওয়াজ ফাউন্ডেশন ও সম্মিলিত গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে মানববন্ধন ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৭ মার্চ ২০২৫) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো নারী ও কন্যাশিশুর অধিকার নিশ্চিত করা, লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠা এবং নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। বর্তমান সমাজে নারীরা এখনও নানা ক্ষেত্রে বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে সমান সুযোগ সৃষ্টি এবং ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা আজকের সময়ের অপরিহার্য দাবি।
মানববন্ধনে নারী কর্মী উর্মি আক্তার বলেন, নারীর মর্যাদা, অর্থনৈতিক মুক্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বব্যাপী নারীরা সমানতালে কাজ করলেও তারা এখনও যোগ্য স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত। বিশেষত শ্রমজীবী নারীরা এখনও মর্যাদার জন্য লড়াই করছেন, যদিও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাদের অবদান অসামান্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পে। আমরা আমাদের অধিকার চাই।
আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও সাধারণ সম্পাদক নাজমা আক্তার বলেন, প্রথমে নারী শ্রমিকদের তাদের শ্রমের মর্যাদা দিতে হবে। কর্মস্থলে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং নারী-পুরুষের সহাবস্থানের মাধ্যমে বৈষম্যহীন কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। অর্থনৈতিক মুক্তি ও সমতার ভিত্তিতে নারীদের ক্ষমতায়িত করার মাধ্যমে তাদের মর্যাদা, নিরাপত্তা, চাকরির নিশ্চয়তা, পদোন্নতিতে সম অধিকার এবং ট্রেড ইউনিয়নে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। সরকারকে শ্রমিকদের আইনি অধিকার, যথাযথ মজুরি এবং নির্যাতনমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষর করতে হবে।
সম্মিলিত গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়াজ ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ খাদিজা আক্তার বলেন, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের একমাত্র উপায় হলো নারী-পুরুষের সমতা ও কাজের মর্যাদা। নারীদের সম অধিকার ও সম সুযোগ নিশ্চিত করে, নিরাপদ এবং নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা টেকসই শিল্প গড়ে তুলব।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়াজ ফাউন্ডেশনের সভাপতি মমতাজ বেগম, পোশাক শ্রমিক উন্নয়ন জনকল্যাণ সংস্থার সভাপতি বিলকিস বেগম এবং সাধারণ সম্পাদক উর্মি আক্তার। এছাড়া বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন।
বিলকিস বেগম ও আকিম আক্তার বলেন, নারীরা আজ অধিকার ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে শিখলেও, কর্মক্ষেত্রে অনেক সময় প্রতিবাদ করার সুযোগ পান না। শারীরিকভাবে হয়রানির শিকার হলেও সমাজের ভয়ে তারা মুখ খুলতে পারেন না, কারণ চাকরি হারানোর ভয় থাকে। তাই যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও নারী অধিকার রক্ষায় সকলকে একত্রিত হতে হবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে, যাতে কেউ নারীদের অপমান বা হয়রানি করতে না পারে।
মানববন্ধন শেষে একটি র্যালি বের হয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এই আয়োজনের মাধ্যমে নারী ও কন্যাশিশুর উন্নয়ন, অধিকার ও ক্ষমতায়নের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
জেসি/এমএইচএস