Logo

রাজধানী

সেবা প্রদানে ডিএনসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়মে কঠোর ব্যবস্থা

প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৫, ০৮:০২

সেবা প্রদানে ডিএনসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়মে কঠোর ব্যবস্থা

ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে অবকাঠামো উন্নয়ন অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। নতুন ওয়ার্ডগুলোতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই এলাকায় অনেক কাজ করতে হবে। উন্নয়ন কাজ ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে অনেক অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু নতুন ওয়ার্ড থেকে আমরা নামমাত্র রাজস্ব পাচ্ছি। অনেকের মধ্যে প্রশ্ন হচ্ছে- আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা পাই না, আমরা কেন ট্যাক্স দেব? আমাদের তো আসলে আপনাদের ট্যাক্সের বিনিময়েই সেবাগুলো নিশ্চিত করতে হবে। আপনারা এ বিষয়টি খেয়াল রাখবেন।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে গুলশান নগরভবনে সম্মেলন কক্ষে ডিএনসিসির নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সাথে গণশুনানিতে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এসব কথা বলেন। গণশুনানিতে নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের আওতাধীন স্কুল-কলেজের শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, বাজার কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও নেতৃবৃন্দ, সোসাইটির নেতৃবৃন্দ, যুবক ও ছাত্র প্রতিনিধি এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।

ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসিতে পূর্বের ৩৬টি ওয়ার্ডের সাথে নতুনভাবে আরও ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হয়েছে, ওয়াসা থেকে খালগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কিন্তু কোনো লোকবল ও যান যন্ত্রপাতি পায়নি ডিএনসিসি। সিটি কর্পোরেশন ভাগ হওয়ার সময় যে লোকবল ছিল বর্তমানে তার চেয়ে আরও কমেছে। অনেকে অবসরে গিয়েছে, অনেকে মারা গিয়েছে। সীমিত লোকবল ও যান-যন্ত্রপাতি দিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষের সেবা নিশ্চিত করাও ডিএনসিসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি। লোকবল নিয়োগের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছি৷

একজন বাসিন্দার প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, সেবা প্রদানে ডিএনসিসির কোনো কর্মকর্তা, কর্মচারী অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে সবাইকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছি। কোনো অনিয়ম, দুর্নীতির প্রমাণ পেলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মশক নিধন কার্যক্রম সম্পর্কে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, মশা নিধন সিটি কর্পোরেশনের একটি বড় চ্যালেঞ্জিং কাজ। সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে মশা নিধন কার্যক্রম সম্ভব নয়। সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি জনগণের সহযোগিতা ও সচেতনতা প্রয়োজন। আমাদের সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা নিয়মিত মশার ওষুধ দিচ্ছে, পরিচ্ছন্ন কর্মীরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবুও মশা নিয়ন্ত্রণে নেই। কারণ অনেক ক্ষেত্রে আমাদের কর্মীরা বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে না, নিরাপত্তাজনিত কারণে আমাদের কর্মীদেরকে বিল্ডিংয়ে ঢুকতে দেওয়া হয় না৷ আমরা অনেক ক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছি দুই বাড়ির মাঝখানে জানালা দিয়ে ময়লা ফেলে দিচ্ছে। বাড়ির গেটের ভেতরে জানালা দিয়ে ময়লা ফেলছে। যেগুলো আমাদের কর্মীরা পরিষ্কার করতে পারে না এবং মশক কর্মীরা সেসব জায়গায় লার্ভিসাইডিং করতে পারে না। ফলে বাসাবাড়ির ভেতরেই মশা উৎপাদন হচ্ছে। অবশ্যই নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। নিজেদের বাড়ির বাউন্ডারির ভেতরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে।

এ সময় তিনি আরও বলেন, আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা অনেক ক্ষেত্রেই বাড়িতে বা ভবনে লার্ভা পেলে মোবাইল কোর্টে আর্থিক জরিমানা করছে কিন্তু এতে স্থায়ী সমাধান হবে না। নিজেরে সচেতনতা না হলে বারবার এই অভিযান করেও মশা নিধন সম্ভব নয়। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। মশা নিধনের পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা নিয়েও আমরা কাজ করছি। আমাদের মহাখালীতে যে হসপিটাল রয়েছে সেখানে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিতে পারবে। সেবার মান বাড়ানোর জন্য আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেব।

নতুন এলাকায় খাস বা সরকারি সংস্থার খালি জমিতে মাঠ ও পার্ক নির্মাণ করা হবে বলে উল্লেখ করে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, নতুন ওয়ার্ডে অপরিকল্পিত উন্নয়ন শুরু হয়েছিল। যে যার মতো করে ভবন নির্মাণ করেছে। ড্যাপে অনেক জায়গায় খালি দেখানো রয়েছে। রাজউকের সাথে সমন্বয় করে সেগুলো রক্ষা করব। ড্যাপে নির্ধারিত মাঠ, পার্ক ও খালি জায়গায় কেউ কোনো ধরনের অবকাঠামো ভবন নির্মাণ করতে পারবে না। যেখানে খাস জমি আছে সেখানে আমরা জেলা অফিসের সাথে এবং অন্যান্য সংস্থার সাথে আলাপ করে মাঠ ও পার্ক করে দেব।

গণশুনানিতে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এ বি এম সামসুল আলম, ডিএনসিসির সচিব মামুন-উল-হাসান এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। 

ডিআর/বিএইচ

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

মোহাম্মদ এজাজ ডিএনসিসি

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর