আ.লীগ নেতা শিমু গা ঢাকা দিয়েছেন, গ্রেপ্তারে পুলিশের ছদ্মবেশ

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ২১:০০
-67cd24e58e6b4-67d4447863d75.jpg)
সাবেক মন্ত্রী আবদুর রহমান ঘনিষ্ঠ পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা মো. সামসুদ্দোহা শিমুর অবস্থান শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাকে গ্রেপ্তারে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে কাজ করছে। যেকোনো সময় তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হবে।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
নাম প্রকাশ না শর্তে একাধিক কর্মকর্তা জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলার পলাতক আসামি আওয়ামী লীগ নেতা শিমুর অবস্থান নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাকে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দারা মাঠে কাজ করছেন। এরআগে পুলিশের কাছ থেকে কৌশলে পালিয়ে গেলেও এবার যাতে হাতছাড়া না হয় সে পরিকল্পনায় আগানো হচ্ছে। তাছাড়া হত্যাচেষ্টা মামলার এই আসামি ধরতে ঊধ্বর্তনদের একটা চাপ রয়েছে।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার ইবনে মিজান বলেন, শিমুকে গ্রেপ্তার প্রচেষ্টার অগ্রগতি আছে। আপাতত আমরা তার বিষয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত জানাচ্ছি না।
সামসুদ্দোহা শিমু ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য। এছাড়াও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন পদে ছিলেন। শিমু শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা। সেখানে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার আত্মীয় এই শিমু। কারাবন্দি আছাদুজ্জামান মিয়ার অনেক সম্পদ তার কাছে গচ্ছিত রয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংক কর্মকর্তারা সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হতে পারবেন না। তবে শিমু চাকরির পাশাপাাশি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
কোনো ব্যাংক কর্মকর্তা রাজনীতি করতে পারবেন না- বিষয়টি জানা ছিল না বলে দাবি করেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘সাবেক মন্ত্রী আবদুর রহমান ও সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার অনুরোধে শিমুকে উপদেষ্টা করা হয়। ব্যাংক কর্মকর্তারা যে দলীয় দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না সেটা আমি জানতাম না। শিমু দলীয় কর্মসূচিতে সব সময় উপস্থিত থাকতেন এবং সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল।’
সম্প্রতি শিমুকে ধরতে রাজধানীর ভাটারা থানার সাইদনগর হাউজিং এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। সাবেক প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক এমপি আবদুর রহমানের ঘনিষ্ঠ শিমুকে গ্রেপ্তারে তিনঘণ্টা ধরে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে বাসার বাতি নিভিয়ে কৌশলে পালিয়ে যান তিনি। বর্তমানে শিমুকে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দারা মাঠে কাজ করছেন। তিনি যাতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারেন সেজন্য বিমানবন্দর ও সকল স্থলবন্দরে বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচয় দিতেন এই শিমু।
জানা গেছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেতা ও আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা সামসুদ্দোহা শিমু ছাত্র জীবনে অধুনা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের তোলারাম কলেজের নেতা ছিলেন। নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার কথা নিজেই প্রচার করতেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট রাজধানীর বছিলা ব্রিজের কাছে হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করার হুকুম দেন- এমন অভিযোগে মামলার আসামি করা হয়েছে তাকে।