গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও সমবায় সমিতি

চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ০৮:৪৬

চট্টগ্রামের দোহাজারীতে লাখে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা মুনাফার লোভ দেখিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে গ্রামীণ উন্নয়ন সঞ্চয় ও ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বরত কর্মকর্তারা হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়ায় শত শত গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন বছর আগে দোহাজারী পৌরসদরের রেলস্টেশন রোডের শারজাহ বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে প্রতিষ্ঠানটি। ফরিদুল আলম নামের এক ব্যক্তি নিজেকে শাখা ব্যবস্থাপক পরিচয় দেন এবং দাবি করেন, প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত অর্থলগ্নি সংস্থা।
ওই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে সরল মানুষদের টাকার লোভ দেখিয়ে আমানত সংগ্রহ শুরু করেন। কিছুদিন পর গ্রাহকদের আমানতের বিপরীতে ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু তার আগেই এক রাতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে ফরিদুল আলম ও তার সহযোগীরা উধাও হয়ে যান। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।
প্রতারণার শিকার অধিকাংশ মানুষ দিনমজুর, রিকশাচালক ও প্রবাসী। তারা জানিয়েছেন, সরকারি অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান বলে বিশ্বাস করে টাকা জমা দিয়েছিলেন। প্রতারণার সময় তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ, মৃত্যুর পর ঋণ মওকুফ, সঞ্চয়ের দ্বিগুণ লাভ, এমনকি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
ভুক্তভোগী লুতফুর নেছা জানান, তিনি পাঁচ বছর মেয়াদে অধিক লাভের আশায় ২০২২ সালে দুই লাখ টাকা ও ২০২৩ সালে দেড় লাখ টাকা জমা দেন। কিন্তু বছর না যেতেই প্রতিষ্ঠানটি উধাও হয়ে যায়।
এলাকার সচেতন নাগরিকরা জানান, নিরীহ মানুষদের ধোঁকা দিয়ে এত বড় প্রতারণার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। তাদের মতে, সমবায় অফিসের আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন ছিল। প্রতিষ্ঠানটি একদিনে গড়ে ওঠেনি। তাই এর বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরতের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
উপজেলা সমবায় অফিসার সামসুদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পালানোর পরপরই তারা পালিয়ে গেছে। গত বছর অডিট করতে পারিনি। অফিসে গিয়ে দেখি তালা ঝুলানো। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
এম হেলাল উদ্দিন নিরব/এমবি