Logo
Logo

সারাদেশ

রোগী আসেন ৮টায়, ডাক্তার বসেন ১০টায়

Icon

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১০

রোগী আসেন ৮টায়, ডাক্তার বসেন ১০টায়

ছবি : সংগৃহীত

অনিয়মই যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২.৩০টা পর্যন্ত হাসপাতালের চেম্বারে বসার কথা থাকলেও তা মানছেন না বেশিভাগ চিকিৎসক।

ভোর থেকেই রোগীরা হাসপাতালের টিকিট কাউন্টার ও চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। কিন্তু দুই-তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে সকাল ১০টার দিকেও যখন চিকিৎসকের দেখা পান না, তখন ক্ষুব্ধ হয়ে চলে যান অনেকে। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে গত চারদিনের চিত্রানুযায়ী দেখা যায়, উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসারের কক্ষটি তালাবদ্ধ। সকাল ১০ টা পেরিয়ে গেলেও অনুপস্থিত রয়েছেন জুনিয়র কনসালটেন্ট (অবস অ্যান্ড গাইনি) ডা. শবনম বানু।

এদিকে ডেন্টাল সার্জন দুলালী সাহার চেম্বারের সামনে রোগীর লম্বা লাইন থাকলেও সকাল সাড়ে নয়টার আগে আসেননি তিনি। তার মতোই প্রতিদিন দেরি করে আসেন সার্জারি বিভাগের ডা. সুলতানাও।অন্যদিকে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. রাজিয়া ও ডা. সাইমার রুমের সামনে লম্বা  লাইন থাকলেও সকাল ১০টার আগে হাসপাতালে দেখা যায়নি দুজনকেই। 

তাছাড়া রোগীরা জানান, এই ৪দিনের মধ্যে একবারের জন্যও হাসপাতালে আসেননি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আজিমপুর গ্রামের হালিমা বেগম (৬০) বলেন, ‘আমার চোখের সমস্যা। আমি গত সপ্তাহে একবার এসেছিলাম। ৩ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ডাক্তার দেখিয়েছি। আজ সকাল ৭ টায় এসেছি। বেলা অনেক হয়েছে, এখনো ডাক্তার আসেননি। দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে আমার পা ব্যথা হয়ে গেছে।’ 

স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা কোহিনুর ইসলাম জানান, ‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা অসুস্থ শরীর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। ডাক্তার আসার কোনো নামগন্ধ নাই। এভাবে দাঁড়িয়ে থেকে অসুস্থতা আরও বাড়ছে।’

হাসপাতালে টিকিট কাউন্টারের মনির বলেন, ‘আমরা সকাল ৯টা থেকে এসে টিকিট দিই। কিন্তু সকাল ১০টার আগে তো একজন চিকিৎসকও হাসপাতালে আসেন না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের দুইজন কর্মচারী বলেন, ‘সকাল ১০টায় ডাক্তার  আসবে। এ জন্য  আমরা হাসপাতাল পরিষ্কার করছি।’ ডাক্তাররা ১০টার আগে কখনো হাসপাতালে আসেন না  বলেও জানান তারা।

এ বিষয়ে আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি আজ ছুটি নিয়ে ঢাকায় এসেছি। তবে এমন তো হবার কথা নয়। ডাক্তাররা তো সকাল  ৯টার মধ্যে হাসপাতালে চলে আসেন।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৈয়দা তাসনুবা মারিয়া বলেন, ‘আমার ডিজি অফিসে কাজ আছে। আমি এখনো অধিদপ্তরে আছি। আমি আমার সিভিল সার্জনকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। তারপর ব্যাকডেটে ছুটির আবেদন করেছি। আর চিকিৎসকদের দেরিতে  আসার  বিষয়ে আমি আপনার  সাথে  একমত। এই বিষয়ে আমি কয়েকটি চিঠিও পাঠিয়েছি।’

মানিকগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. মকছেদুল মোমিন বলেন, ‘যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এএ/এটিআর


Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর