Logo

সারাদেশ

কুষ্টিয়ার বিএনপি নেতার বিতর্কিত সেই ক্লিনিক সিলগালা-জরিমানা

Icon

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ২৩:৩৭

কুষ্টিয়ার বিএনপি নেতার বিতর্কিত সেই ক্লিনিক সিলগালা-জরিমানা

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহমত আলী রব্বানীর পরিচালিত বহুল বিতর্কিত সেই জয়মন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় প্রতিষ্ঠানটিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা ধরে অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মহসিন উদ্দিন। এ সময় সেনাবাহিনী, ডিবি ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। 

মে‌ডি‌কেল প্র‌্যাক‌টিস ও বেসরকা‌রি ক্লিনিক ও ল‌্যাব‌রেট‌রি (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ ১৯৮২ এর ধারা ১৩(২) মোতা‌বেক ক্লিনিকের ম্যানেজার সোহেল মোল্লাকে পাঁচ হাজার অর্থদণ্ড, অনাদা‌য়ে ৭ দি‌নের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইসা‌থে সেবাগ্রহীতার জীবন ও নিরাপত্তা বিপন্নকারী সেবা প্রদান করা হ‌চ্ছে ম‌র্মে প্রতীয়মান হওয়ায় ভোক্তা অধিকার আইন, ২০০৯ এর ৫২ ধারা মোতা‌বেক ক্লিনিকের মালিক রহমত আলী রব্বানীকে ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদা‌য়ে ৩০ দি‌নের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

অর্থদণ্ড ২ লাখ ৫ হাজার টাকা ঘটনাস্থ‌লেই আদায় শেষে জয়মন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। তবে ওই সময়ে একজন সিজারিয়ান রোগী থাকায় তাকে মিরপুর উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল স্থানান্তরিত করা হয়।

বহু বিতর্কিত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ঘটনায় জয়মন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা হয়। এঘটনায় এলাকার মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। 

জানা গেছে, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর পরই রহমত আলী রব্বানী তার ছোট ভাই ইব্রাহিম আলী ও জাহেদ আলীর নেতৃত্বে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে নিজের ক্লিনিকে রেফার করাতেন। এতে কাজ না হলে অস্ত্রধারী বাহিনীর লোকজন ওপেন অস্ত্রের মহড়াসহ বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিতেন। এসব ঘটনায় কিছু কর্মকর্তা শারীরিক নির্যাতনের শিকারও হন।

তার ক্লিনিকে ভর্তি হওয়া রোগীদের অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে ক্লিনিকের সাথেই তাদেরই মালিকানা জয়মন ফার্মেসি হতে ওষুধ কিনতে হতো। আবার বাড়তি টাকা দিয়ে তাদেরই ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করাতে বাধ্য করানো হতো।

রহমত আলী রব্বানী ও তার ভাইদের দ্বারা পরিচালিত ফার্মেসি, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রমরমা ব্যবসার আড়ালে বিশেষ বিনোদনের কারবার রয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন। 

নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে সরকারি হাসপাতালের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি হাসপাতালে সিজার করার সুন্দর বন্দোবস্ত রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে সিজার হওয়ার পরও একাধিক প্রসূতিকে জোর করে তার ক্লিনিকে ভর্তি করানো হতো। রব্বানীর এই অবৈধ সাম্রাজ্যের পতন না হলে মিরপুরের বহু সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘব হবে না।

ওএফ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর