পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও মানছেন না ব্যবসায়ীরা

চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৯

ছবি : বাংলাদেশের খবর
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে চাঁদপুরে গরু, খাসি, মুরগি ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় জেলা প্রশাসন। কিন্তু বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ ব্যবসায়ী সেই নির্ধারিত মূল্য না মেনে বেশি দামেই পণ্য বিক্রি করছেন।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক বৈঠকে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৮০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা, সোনালী (কক) মুরগি ২৭০ টাকা এবং প্রতি পিস ডিম ৯.৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়।
কিন্তু দাম নির্ধারণের ২৪ ঘণ্টা পরও পূর্বের দামেই পণ্য বিক্রি করছেন অনেকে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) শহরের বিপণীবাগ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ ব্যবসায়ী প্রশাসনের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করছেন।
বাজারের আনোয়ার হোসেন আনুর দোকানে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। দোকান মালিক আনু জানান, ‘মূল্যতালিকা পরিবর্তন করা হবে, এরপর আমরা নির্ধারিত দামে বিক্রি করব।’
একই বাজারে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়, যা নির্ধারিত মূল্যের সমান হলেও ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা এবং সোনালী (কক) মুরগি ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। ব্যবসায়ী রাসেল খান বলেন, ‘প্রশাসন দাম নির্ধারণ করলেও পরিবেশকদের সাথে আলোচনা করা হয়নি, তাই আমরা নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে পারছি না।’
ডিমের বাজারেও অনিয়ম দেখা গেছে। আ. রহমান, তারেক ও নুরু স্টোরে প্রতি ২০টি ডিম ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা নির্ধারিত দামের চেয়ে ১০-২০ টাকা বেশি।
শহরের নতুন বাজারেও দেখা গেছে একই চিত্র। বাজারটিতে কালুর ব্রয়লার হাউজে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা, কক মুরগি ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও পাশের আল-আমিন ব্রয়লার হাউজে ব্রয়লার ২০০ টাকা এবং কক ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ী কালু বলেন, ‘আমরা ক্রয়মূল্যের ওপর নির্ভর করে বিক্রি করি।’ অন্যদিকে আল-আমিন জানান, ‘আমাদের ক্রয়মূল্য বেশি, তাই বিক্রির দামও বেশি। প্রশাসনের কোনো নির্দেশনা পাইনি।’
এ ছাড়া বাজারের গরুর মাংস ব্যবসায়ী সেলিমের দোকানে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের কোনো নির্দেশনা পাইনি। যদি পাই, তাহলে নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করব।’
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, ‘বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। যেসব ব্যবসায়ী নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে বিক্রি করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের পাশাপাশি ক্রেতাদেরও সচেতন হতে হবে।’
আলআমিন ভূঁইয়া/এটিআর