-67c9576bd29e9.jpg)
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝারসিংহেশ্বর ও খগারচর গ্রামের মানুষের ডিমলা শহরে যাতায়তের একমাত্র ভরসা কাঠের সাঁকো। তিস্তা নদীর বাঁধ থেকে চরে যাওয়ার সংযোগ সড়কের এই সাঁকোটি স্থানীয়দের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার পথচারী, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী এই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হন।
সাঁকোটি উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় যাওয়ার একমাত্র রাস্তা। প্রতি বছর স্থানীয়দের আর্থিক সহায়তায় বাঁশ ও কাঠ দিয়ে সাঁকোটি তৈরি করা হয়। এতে পারাপারের সময় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।
প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পূর্ব ছাতনাই থেকে শহরে শিক্ষার্থীরা সহজে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ভূমি অফিস, হাসপাতাল ও থানায় যেতে পারে না। কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে সমস্যায় পড়েন। ফলে তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
প্রতিটি নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও ২০ বছরেও সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি। স্থানীয়দের আশা, সেতু নির্মাণ হলে এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে। পথচারী ও শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা রতন মিয়া বলেন, প্রতিদিন ৮ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ এই সড়ক ব্যবহার করেন। কাঠের সাঁকো পার হতে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছেন। বর্ষাকালে এটি পানির স্রোতে ভেসে যায়। তখন কলার ভেলায় করে পার হতে হয়। এতে শিশুরা বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। কয়েক মাস পাঠদান থেকে বঞ্চিত হয়।
স্থানীয় রফিকুল ইসলাম বলেন, সাঁকোটি আমাদের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারী যানবাহন চলতে না পারায় কৃষিপণ্য বাজারে নেওয়া সম্ভব হয় না। অসুস্থ ব্যক্তিদের হাসপাতালে নেওয়ারও কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। জরুরি ভিত্তিতে এখানে একটি সেতু প্রয়োজন।
ঝারসিংহেশ্বর গ্রামের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইমন ও সাব্বির হোসেন জানান, বর্ষায় তারা ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে যান। বাঁধ থেকে সংযোগ সড়কের ওই কাঠের সাঁকোর বদলে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান তারা।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থী, কৃষক, শ্রমিক ও পথচারীদের সুবিধার্থে ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনুরোধ করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সফিউল ইসলাম বলেন, সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডার পেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্মাণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল মিয়া বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে সেতু নির্মাণের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- তৈয়ব আলী সরকার/এমজে