
ছবি : বাংলাদেশের খবর
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার জাফরগঞ্জ যমুনার পাড়ে চারদিন পর আবারও উড়েছে তরুণ জুলহাস মোল্লার তৈরি বিমান। রোববার (৯ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে যমুনা নদীর বালুচরে উড্ডয়ন করে তার তৈরি আরসি বিমানটি।
এ সময় হাজারো উৎসুক মানুষ যমুনার পাড়ে ভিড় করেন এবং পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিমানের অবসরপ্রাপ্ত পাইলট ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুকসহ সিভিল এভিয়েশন বিভাগের কর্মকর্তারা।
জুলহাস মোল্লা (২৮) মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের ষাইটঘর তেওতা গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা জলিল মোল্লা দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায় জন্মগ্রহণ করলেও নদীভাঙনের কারণে বর্তমানে তারা শিবালয় উপজেলার ষাইটঘর এলাকায় বসবাস করছেন। পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান জুলহাস ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। তবে অবসর সময়ে তিনি উড়োজাহাজ তৈরি করেন।
জুলহাস তার তৈরি উড়োজাহাজের উড্ডয়নের জন্য প্রায় তিন বছর গবেষণা করেছেন। তিনি এক বছর সময় নিয়ে বিমানটি তৈরি করেছেন।
জুলহাস মোল্লা জানান, বিমানের অবকাঠামো তৈরি হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও লোহা দিয়ে এবং এটি পানির পাম্পের ‘সেভেন হর্স পাওয়ার’ ইঞ্জিন ব্যবহার করে চলাচল করে। বিমানটি মূলত পরীক্ষামূলকভাবে প্রশিক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। তবে সরকারি সহযোগিতা পেলে এটি বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা যেতে পারে। জুলহাসের তৈরি বিমানটি ৫০ ফুট উচ্চতায় উড়তে সক্ষম। এটি মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা থেকে বাবা বিল্টু রহমান তার ছেলে রোহানকে নিয়ে বিমানটি দেখতে এসেছিলেন। তারা জানান, রোহান টিভিতে বিমানটি দেখে আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং এর জন্য তাদের যমুনার পাড়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
মানিকগঞ্জ শহরের সেওতা এলাকা থেকে আসা তৌফিক বলেন, ইচ্ছাশক্তি ও চেষ্টা থাকলে অনেক কঠিন বিষয়ও সম্ভবপর হয়ে ওঠে। এ তরুণ নিজের পরিশ্রমে উড়োজাহাজ তৈরি করেছেন এবং সফলভাবে আকাশে উড়িয়েছেন।
বাংলাদেশ বিমানের অবসরপ্রাপ্ত পাইলট ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, জুলহাসের প্রয়োজনীয় অ্যাকাডেমিক রিসোর্স ও কারিগরি সহযোগিতার বিষয়ে আমরা সহায়তা করবো। তার তৈরি বিমানের গবেষণাকে আরও উন্নত করতে কীভাবে কাজ করা যায়, সে বিষয়েও আমরা একসঙ্গে কাজ করবো।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে শিবালয় উপজেলার জাফরগঞ্জ এলাকায় যমুনা নদীর চরে নিজের তৈরি উড়োজাহাজে চড়ে উড়েছিলেন জুলহাস মোল্লা।
আফ্রিদি আহাম্মেদ/এমবি