উত্তরাঞ্চলে আলো ছড়াচ্ছে নীলফামারী মেডিকেল কলেজ

নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ১১:৪২

ছবি : বাংলাদেশের খবর
২০১৮ সালের ২৬ আগস্ট নীলফামারী মেডিকেল কলেজসহ নতুন চারটি মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেয় তৎকালীন সরকার। ৩০ আগস্ট নীলফামারী মেডিকেল কলেজটি পূর্ণাঙ্গভাবে অনুমোদন পায়। সেই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর খুলনা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম শাহকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। একই বছরের ১৫ অক্টোবর কলেজের প্রথম ব্যাচের ভর্তি শুরু হয়। ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে ৪৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন।
২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলফামারী ডায়াবেটিকস হাসপাতালের নতুন ভবনে কলেজটির অস্থায়ী ক্যাম্পাসে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে মেডিকেল কলেজটি উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী জেলায় শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে। বর্তমানে কলেজটি জেলা শহরের নটখানা নামক স্থানে ম্যাটসের নবনির্মিত ভবনে স্থানান্তরিত হয়েছে। এখানে প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষ, লাইব্রেরি, ব্যবহারিক ল্যাব, সেমিনার কক্ষ, শৌচাগার, অধ্যক্ষের বাসভবন, ছাত্র-ছাত্রী নিবাস ও স্টাফ ডরমেটরিসহ সকল সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে।
কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, কিছু মহল কলেজটির মানহীনতা নিয়ে কথা বলছে, যা তারা সঠিক মনে করছেন না।
কলেজের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী অর্পিতা চৌধুরী বলেন, ‘৫টি ব্যাচের আমরা সবাই ক্যাম্পাসের ভেতর হোস্টেলে থাকছি। তারা কীভাবে বলে নীলফামারী মেডিকেল কলেজ মানহীন? এখানে পর্যাপ্ত শিক্ষক আছে, ল্যাব আছে, অধ্যক্ষের বাসভবন আছে, কোনটারও কমতি নেই। সেটা কীভাবে মানহীন হলো, আমাদের বুঝে আসে না।’
একই কলেজের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহাতুল জান্নাত বলেন, আমাদের কলেজে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শ্রেণিকক্ষসহ সকল সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তাই মানহীনতা বলে কিছু থাকতে পারে না।
এদিকে, নীলফামারী মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে জেলার সর্বস্তরের জনগণ ও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। বক্তারা জানান, নীলফামারী মেডিকেল কলেজ আমাদের বহু বছরের লালিত স্বপ্ন। যদি এখানে কোনো অপচেষ্টা হয়, তবে আমরা তা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করবো।
কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জিম্মা হোসেন জানিয়েছেন, নীলফামারী ডায়াবেটিকস হাসপাতালের ভবন থেকে মেডিকেল কলেজটি এখন নটখানা ম্যাটসের নতুন ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়েছে। এখানে শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ৩৫ একর জমিতে ভবন নির্মাণের কাজ চলছে, যা সম্পন্ন হলে আমরা স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হবো।
বর্তমানে কলেজে ৭৮টি শিক্ষকের মধ্যে ৫৬ জন কর্মরত রয়েছেন। তবে শিক্ষকের স্বল্পতা থাকলেও পাঠদানে কোনো সমস্যা নেই। অধ্যক্ষ বলেন, এটি দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে। এখানে শিক্ষার্থীদের শেখার কোনো বাধা নেই।
কলেজে প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪৮ জন, দ্বিতীয় ব্যাচে ৪৮ জন, তৃতীয় ব্যাচে ৪১ জন, চতুর্থ ব্যাচে ৪১ জন, পঞ্চম ব্যাচে ৩৫ জন। এছাড়া ষষ্ঠ ব্যাচে ৭৫ জনের মধ্যে ২৫ জন ছাত্র এবং ৫০ জন ছাত্রী রয়েছেন। প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এখন ইন্টার্নশিপ করছেন। খুব শীঘ্রই ডাক্তার হয়ে বের হবেন তারা।
তৈয়ব আলী সরকার/এমবি