দোহাজারী থেকে ২ কোটি টাকা নিয়ে উধাও ফরিদ

চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৫, ১৪:০৮

চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌর সদর এলাকা থেকে গ্রামীণ উন্নয়ন সঞ্চয় ও ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটির সভাপতি ফরিদুল আলম ও তার সহযোগীরা পালাতক বলে জানা গেছে। বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে পৌর সদরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ২ কোটি টাকা নিয়ে উধাও এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে সভাপতি ফরিদুল আলম ও তার সহযোগীরা। অন্যরা হলেন- মাহমুদুল হক, মো. শহিদুল্লাহ হিরু, মো. নাজিম উদ্দীন, সাইফুল ইসলাম, মো. নুরুল হোসাইন প্রমুখ।
স্থানীয়রা জানান, ২০১৬ সাল থেকে দোহাজারী পৌর সদর এলাকার রেলস্টেশন রোডে শারজাহ বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় দুটি রুম ভাড়া নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন হয়। ফরিদুল আলম নামের এক ব্যক্তি নিজেকে প্রতিষ্ঠানটির শাখা সভাপতি পরিচয় দেন। এলাকার সহজ সরল মানুষদেরকে সঞ্চয়ের বিপরীতে বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যান তারা।
এলাকাবাসী ও গ্রাহকদেরকে জানান, প্রতিষ্ঠানটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ও অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠান। এটাতে সরকারি রেজিস্ট্রেশন রয়েছে বলে ওই ব্যক্তি ও তার সহযোগীরা গ্রামে ঘুরে ঘুরে সহজ-সরল মানুষদের লোভ দেখিয়ে আমানত সংগ্রহ শুরু করেন। কিছু দিন পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের আমানতের বিপরীত ঋণ বিতরণ শুরু হওয়ার কথা। তার আগেই গত ৪ আগস্টের পর রাতে প্রধান কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে ফরিদুল আলম ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যান। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক মোহাম্মদ রুবেল বলেন, সরকারি অনুমোদিত বলে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করেন। টাকা যাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, তাদের আমানতের বিপরীতে সহজ কিস্তিতে ঋণ, সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালানো, মৃত্যুর পর ঋণ মওকুফ করা, সঞ্চয়ের দ্বিগুণ লাভ, ঘর নির্মাণ করে দেওয়াসহ নানা আশ্বাস দেওয়া হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক লুৎফুর নেছা নামে এক মহিলা বলেন, ৫ বছর মেয়াদে অধিক লাভ দেখিয়ে ২২ সালে ২ লাখ টাকা ও ২৩ সালে দেড় লাখ টাকা কিস্তি নেন। কিন্তু বছর না যেতেই বন্ধ হয়ে যায় প্রধান কার্যালয়। তারপর থেকে খোঁজ নেই প্রতিষ্ঠানটির।
এলাকার নিরীহ মানুষকে ধোঁকা দিয়ে এতগুলো টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তবে সমবায় অফিসারদের এ বিষয়ে আরো সজাগ থাকা উচিত ছিল। এসব প্রতিষ্ঠান একদিনে গড়ে উঠেনি। তবে এর তদন্ত হওয়া ও ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরতের বিষয়ে প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।
উপজেলা সমবায় অফিসার সামসুদ্দিন ভূইয়া জানান, ফরিদ ও তার সহযোগীরা পালিয়েছে। যার ফলে গত বছরে অডিট করতে পারিনি। অফিসে গিয়ে দেখি তালা ঝুলছে। লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাইলে তারা বলেন, দোহাজারী পৌর সদর এলাকা থেকে গ্রাহকের প্রায় ২ কোটি টাকা নিয়ে উধাও প্রতিষ্ঠানটি।
এম হেলাল উদ্দিন নিরব/ওএফ