ইট বিক্রি বন্ধের ঘোষণা, কর্মহীন হতে পারে ৫০ লাখ শ্রমিক

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৫, ১৯:০১
-67d035db27319-67d185c3880d4.jpg)
বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সাত দফা দাবি না মানলে আগামী ২৫ মার্চ থেকে সারা দেশের প্রায় আট হাজার ইটভাটায় ১৫ দিন ইট বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন সমিতির সভাপতি। এতে ১০ লাখ নারী শ্রমিকসহ প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক কর্মহীন হতে পারে। এছাড়াও প্রায় ১৪ হাজার মালিক লোকসানে পড়তে যাচ্ছে।
এ দাবি না মানা হলে আগামী বছর থেকে সারাদেশে ইট উৎপাদন বন্ধ করা হবে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি ফিরোজ হায়দার খান।
তিনি আরও বলেন, এই খাতের মালিকদের প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার ব্যাংকে লোন রয়েছে। ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেলে এই লোনের টাকা অনাদায়ি থেকে যাবে। হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাবে সরকার।
এরআগে, মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে সাত দফা দাবি নিয়ে টাঙ্গাইলসহ সারাদেশে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ইটভাটা মালিক ও শ্রমিকরা। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারি মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
তাদের দাবি গুলো হচ্ছে, ২০১৩ সালের ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনের জিগজাগ ভাটা বৈধ পদ্ধতির উল্লেখ থাকলেও উক্ত আইনের ৮ (৩) (ঙ) এবং ৮ (৩) (খ) উপ-ধারায় ‘দূরত্ব নির্দিষ্ট’ করণের কারণে দেশের কিছু জিগজাগ ইটভাটার মালিকগণ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স পাচ্ছেন না। ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর হাইব্রিড কিলুন এবং টানেল কিলন এর ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ এলাকার দূরত্ব ১০০০ মিটারের পরিবর্তে ৪০০ মিটার নির্ধারণ করেছে সুতরাং আমাদের জিগজ্যাগ ভাটার জন্য উক্ত আইনের ৮ (৩) (ঙ) ধারায় নিষিদ্ধ এলাকার দূরত্ব ৪০০ মিটার এবং আইনের ৮ (৩) (খ) এ বনের দূরত্ব ৭০০ মিটার করে লাইসেন্স ও ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিপত্র জারীর মাধ্যমে পরিচালনা করার সুযোগ প্রদানের আবেদন জানাচ্ছি। জিগজাগ ইটভাটায় কোন প্রকার হয়রানি বা মোবাইল কোর্ট করা যাবে না, তাহা না হলে আমরা ভ্যাট টেক্স দেয়া বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবো। কোনো ইটভাটা বন্ধ করতে হলে সরকারিভাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে বন্ধ করতে হবে। মাটি কাটার জন্য ডিসির প্রত্যয়নপত্র নেয়ার বিধান বাতিল করতে হবে। পরিবেশগত ছাড়পত্র, ডি.সি লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্রাদি ইস্যু/নবায়নের সময় কেন্দ্রীয় ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির প্রত্যয়ন পত্র বাধ্যতামূলক ভাবে জমা দেওয়ার বিধান করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ করছি। ইটভাটাকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার দাবি করছি। ইটভাটা পরিচালনায় দীর্ঘমেয়াদি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
প্রসঙ্গত, ঝিকঝ্যাক ইটভাটার ছাড়পত্র ও লাইন্স প্রাপ্তির জটিলতার নিরসনের জন্য বাংলাদেশের ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির ৭ দফার দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে।
রেজাউল করিম/এমআই