‘আমরা তো স্বাধীন দেশের নাগরিক, আমার ছেলের বিচার কেনো পাচ্ছি না?’

মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১৫:১৬
-67d6970abb10c.jpg)
নিখোঁজ ইয়াসিনের সন্ধান চান মা সুলতানা আক্তার
‘আমরা তো স্বাধীন দেশের নাগরিক। আমার ছেলেও এই দেশের নাগরিক। তাহলে আমার ছেলের বিচার কেনো পাচ্ছি না? আমার ছেলেকে খুঁজতে কেউ সাহায্য করে না কে ‘— কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই বলছিলেন নিখোঁজ ইয়াসিন মিয়ার মা সুলতানা আক্তার। ৯ দিন পেরিয়ে গেলেও ইয়াসিনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। একমাত্র ছেলেকে যেকোনো অবস্থায় ফিরে পেতে চান তিনি।
নিখোঁজ ইয়াসিন মিয়া (২০) নেত্রকোনার মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালাতেন তিনি।
গত ৮ মার্চ যাত্রী নিয়ে খালিয়াজুরী উপজেলার রসূলপুর ঘাটে গিয়েছিলেন ইয়াসিন। সেখানে মাছ শিকারিদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে নিখোঁজ হন ইয়াসিনও। পরে তার মামা জুলহাস মিয়া ১০ মার্চ মদন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। কিন্তু পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছেন না তারা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত মাছ শিকারিরা দুই সপ্তাহ ধরে খালিয়াজুরীর বিভিন্ন জলমহালে মাছ শিকার করছিলেন। ৮ মার্চ সকালে ধনু নদীর রসুলপুর ঘাটে মাছ শিকারিদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ বাধে। এতে শতাধিক লোক আহত হন এবং বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। সংঘর্ষের পর ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার হলেও ইয়াসিন মিয়ার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ইয়াসিনের মামা জানান, খালিয়াজুরী থানায় গেলে পুলিশ তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। এর ফলে মদন থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি। তারা ইয়াসিনকে যেকোনো অবস্থায় ফিরে পেতে চান।
মদন থানার ওসি নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, ইয়াসিন নিখোঁজের ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, খালিয়াজুরী থানার ওসি মকবুল হোসেন জানান, সংঘর্ষের পর ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইয়াসিনের নিখোঁজের ব্যাপারে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি বলেও জানান তিনি।