ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত
মৃত ভেবে বাংলাদেশির গলায় দড়ি বেঁধে ফেলে গেল বিএসএফ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ২০:৫৬
-67d6e6991e687.jpg)
ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে ফারুক হোসেন (৪২) নামের এক বাংলাদেশি নাগরিককে নির্যাতনের পর মৃত ভেবে ফেলে রেখে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে।
রোববার (১৬ মার্চ) সকালে উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা কুমিল্লাপাড়া মাঠে কৃষকরা কাজ করতে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
আহত ফারুক হোসেন নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার বেরলি গ্রামের মোতালেব শেখের ছেলে। তিনি জানান, বিএসএফের সদস্যরা তাকে নির্যাতনের পর মৃত ভেবে গলায় দড়ি বেঁধে টানতে টানতে সীমান্তের দিকে ছুড়ে ফেলে দেয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ওবাইদুল ইসলাম জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে ফারুক স্ত্রী হাসি শেখ ও কন্যা আয়েশাকে নিয়ে খোসালপুর বর্ডার দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছিল। এ সময় তিনি বিএসএফের হাতে আটক হয়ে নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হন।
ফারুক হোসেন বলেন, ভারতের বরণবেড়ে ১৯৪ ব্যাটালিয়ন বিএসএফের সদস্যরা আমাকে আটক করে। সে সময় তারা আমার গলায় দড়ি বেঁধে টানতে টানতে সীমান্তের দিকে মৃত ভেবে ছুড়ে ফেলে দেয়। তখন আমার জ্ঞান হারিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ১০ বছর ধরে পরিবার নিয়ে আমি ভারতের ভেলর এলাকায় বসবাস করি। সেখানে বাংলাদেশি রোগীদের সহায়তার কাজ করি। সম্প্রতি রোগী কমে যাওয়ায় অবৈধভাবে ভারতের রবণবাড়িয়া সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরছিলাম। দেশে ফেরার পথে তাকে সহায়তা করেন ভারতের মধ্যে আলী হোসেন ও বাংলাদেশের মধ্যে বাঘাডাঙ্গা গ্রামের শাহজাহানের ছেলে মখলেছ ও একই গ্রামের আপিল উদ্দীনের ছেলে হাপি মন্ডল নামে তিনজন দালাল। এই চক্রটি তার কাছ থেকে মাথা প্রতি ১৫ হাজার টাকা করে মোট ৪৫ হাজার টাকা নেয়।
এ ব্যাপারে মহেশপুর ৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশি যুবককে নির্যাতনের বিষয়টি শুনেছি। এ নিয়ে সীমান্তে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। খোঁজ পেলে বিস্তারিত জানানো যাবে।
এদিকে তথ্য নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন ঈদ সামনে রেখে ঝিনাইদহের মহেশপুরের সীমান্ত এলাকার চোরাচালান পয়েন্টগুলো উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে। মানব পাচারের পাশাপাশি গরু, মোবাইল, কাপড়, সোনার গহনা ও বিভিন্ন ধরনের মাদক দেদারছে ঢুকছে। সীমান্ত এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ ও বিজিবির সোর্সরা চোরাচালান ঘাটগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুরহান/বিএইচ