খালের উৎপত্তিস্থলে ফ্যাক্টরি স্থাপন, পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা

লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ১৬:১৮
-67d7f6f6b154c.jpg)
বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে আন্ধারী খালের উৎপত্তিস্থলে নির্মাণাধীন লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের রাবার প্রসেসিং ফ্যাক্টরি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তারা আশঙ্কা করছেন, ফ্যাক্টরিটির কারণে আন্ধারী খালের পানি দূষিত হবে, যা তাদের কৃষি, মৎস্যচাষ ও দৈনন্দিন পানির প্রয়োজনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হতে পারে।
স্থানীয় মুরুং পাড়ার প্রধান কারবারী রুমতুই মুরুং বলেন, ‘লামা রাবারের এক হাজার ছয়শ একর জমি থাকা সত্ত্বেও আমাদের পাশে কেন ফ্যাক্টরি নির্মাণ করতে হবে? পাহাড়ে পানি সংকট রয়েছে, তাদের কি মনে হয় আমরা চাষাবাদ করতে পারব না এবং এলাকাটি ছেড়ে চলে যেতে হবে?’
এ ছাড়া ৮নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আব্দুল হালিম বলেন, ‘লামা রাবারের উচিত অন্যত্র ফ্যাক্টরি স্থাপন করা। যদি এখানে ফ্যাক্টরি তৈরি হয়, তবে তার বর্জ্য মিশ্রিত খালের পানি ব্যবহার করে প্রায় ৪০০ একর জমি চাষাবাদ ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত হবে, যার ফলে স্থানীয়রা মারাত্মক রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারে এবং পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ২৫০-৩০০ পরিবারের মানুষ এই খালের পানির ওপর নির্ভরশীল। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজের কয়েক হাজার শিশু-কিশোরও এই পরিবেশ দূষণের শিকার হবে। কারণ ফ্যাক্টরি আবাসিক এলাকা ও স্কুল ক্যাম্পাসের খুব কাছাকাছি নির্মিত হচ্ছে।’
এই উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে পাড়ার প্রধান কারবারি রুমতুই মুরুংয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সোমবার (১৭ মার্চ) সকালে লামা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাৎ করে লিখিত আবেদন জমা দেন। তারা দ্রুত ফ্যাক্টরি অন্যত্র স্থানান্তরের দাবি জানান।
লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ম্যানেজার মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘আমরা এখনো ফ্যাক্টরি নির্মাণের কাজ শুরু করিনি। পরিবেশ অধিদপ্তরে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি। অনুমতি পেলেই ফ্যাক্টরি নির্মাণের কাজ শুরু করব।’
পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবানের সহকারী পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘লামা রাবার আমাদের কাছে একটি আবেদন করেছে। আমি ইতোমধ্যে এলাকা পরিদর্শন করেছি। সবদিক বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মঈন উদ্দিন জানান, ‘পরিবেশের ক্ষতি এবং পানির উৎস নষ্ট হয়, এমন কোনো কাজ করতে দেওয়া হবে না। স্থানীয়দের অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
- বেলাল আহমেদ/এমজে