বান্দরবানে আম বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা

সোহেল কান্তি নাথ
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৯:০৭

গাছে গাছে ছেয়ে গেছে আমের মুকুল
বান্দরবানের সবুজ পাহাড়জুড়ে এখন আমের গুটি ও সোনালি মুকুলের সমাহার। আম্রপালি, রুপালি, রাংগোয়াইসহ দেশি-বিদেশি নানা জাতের আমের চাষ হয় এ জেলায়। চলতি মৌসুমে ফলনের গুণগতমান নিশ্চিত করতে চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগানের পরিচর্যায়। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এবারও ভালো ফলনের আশা করছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার রুমা, রোয়াছড়ি, থানচি ও সদরসহ বিভিন্ন অঞ্চলের পাহাড়জুড়ে আমের গুটি ও সোনালি মুকুলে ছেয়ে গেছে। প্রতিটি বাগানে পরিচর্যার অংশ হিসেবে নিয়মিত পোকা দমন স্প্রে ও আগাছা পরিষ্কার করা হচ্ছে, যাতে মুকুল থেকে সুন্দরভাবে ফল গঠিত হয়।
পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া আম চাষের উপযোগী হওয়ায় আম্রপালি আমের ব্যাপক চাষ হচ্ছে এখানে। খেতে সুস্বাদু, আকৃতিতে বড় ও দাম ভালো হওয়ায় বান্দরবানের আম্রপালি আমের চাহিদা সারা দেশজুড়ে রয়েছে। খরচ কম হওয়ায় কৃষকেরা বিক্রি করে ভালো লাভ পান। মুকুল আসার পর থেকেই বিভিন্ন জেলার পাইকাররা বাগান কিনতে আসেন। এ বছরও ভালো ফলনের আশা করছেন চাষিরা।
বান্দরবান সদরের চিম্বুক পাহাড়ের বসন্তপাড়া এলাকার আম চাষি মেনরত ম্রো বলেন, ‘এ বছর ৫ একর জমিতে আম্রপালি ও বার্মিজ আমের বাগান করেছি। মুকুলও এসেছে ভালো, কিছু কিছু গাছে গুটিও ধরেছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে ভালো ফলন হবে এবং দামও ভালো পাব।’
ফারুকপাড়া এলাকার চাষি ভানরুন পার বম জানান, ‘আমার বাগানে স্প্রে করছি, যাতে পোকা না ধরে এবং মুকুল থেকে ফল তৈরি হয়। সময়মতো বৃষ্টি হলে গত বছরের তুলনায় এবারের ফলন আরও ভালো হবে, লাভও বেশি হবে বলে আশা করছি।’
বান্দরবান সদর কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুচিং মারমা জানান, ‘আম চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা বাণিজ্যিকভাবে আম চাষে সফল হতে পারেন। চাষিরা আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী পরিচর্যা করছেন, ফলে আম উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এম এম শাহনেওয়াজ বলেন, ‘এ বছর জেলায় আমের চাষের জমির পরিমাণ বেড়েছে। আমরা কৃষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, যাতে তারা বাণিজ্যিকভাবে আম চাষে লাভবান হতে পারেন। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এবার আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।’
উল্লেখ্য, কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বান্দরবানে ১০ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন।
এটিআর/এটিআর