Logo

সারাদেশ

সুন্দরবনে নতুন এলাকায় ফের ধোঁয়ার কুণ্ডলী

Icon

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১৩:০৫

সুন্দরবনে নতুন এলাকায় ফের ধোঁয়ার কুণ্ডলী

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজি টহল ফাঁড়ি এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও নতুন করে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে। ড্রোনে ধারণ করা ফুটেজে দেখা যায়, প্রায় এক কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে বড় এলাকাজুড়ে ধোঁয়া উঠছে।

রোববার (২৩ মার্চ) সকাল পৌনে ৯টার দিকে সংবাদকর্মীরা ড্রোন উড়িয়ে ধোঁয়ার অস্তিত্ব শনাক্ত করেন। পরে সাড়ে ৯টার দিকে গুলিশাখালী বন টহল ফাঁড়ির অন্তত তিনটি এলাকায় আগুনের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে বন বিভাগ।

বন বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৮৮৭ মিটার দূরে তিন-চারটি স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে ধোঁয়া দেখা গেছে, যা দ্রুত বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট বন অফিসগুলোকে দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে শনিবার সকালে কলমতেজি টহল ফাঁড়ির টেপার বিল এলাকায় আগুন লাগলে স্থানীয় বাসিন্দারা বন বিভাগকে খবর দেন। এরপর বন বিভাগ, সিপিজি, ভিটিআরটি, টাইগার টিমের শতাধিক সদস্য আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। বিকেলের মধ্যে ফায়ার লাইন কেটে ফেলা হলেও সন্ধ্যার আগে ফায়ার সার্ভিসের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পানি দিতে ব্যর্থ হয়, কারণ পানির উৎস ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে।

রাত ৯টার পর বন বিভাগের নিজস্ব পাম্প ও পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি ছিটানো শুরু হয়।

ধানসাগর স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা বিপুলেশ্বর দেবনাথ বলেন, বিকেলের আগেই আমরা ফায়ার লাইন কাটা শেষ করি এবং পাইপলাইন স্থাপন করি। তবে আগুনের কেন্দ্রে পৌঁছানো যায়নি। তিনি আরও জানান, ফায়ার সার্ভিসের কাছ থেকে পাইপ ধার করে রাত ৯টার পর পানি ছিটানো শুরু করা হয়। বন বিভাগ ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টায় ভোর ৪টার দিকে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে।

এর আগে শনিবার দুপুর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা কোদাল, কলসি ও বালতি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেন।

এদিকে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপন চন্দ্র দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন ধানসাগর স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা বিপুলেশ্বর দাস ও কলমতেজি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

খুলনা ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) সাকরিয়া হায়দার জানান, বাগেরহাট, শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জের পাঁচটি ইউনিট সুন্দরবন সংলগ্ন ভোলা নদীর তীরে অবস্থান করছে। বন বিভাগের নিজস্ব সেচ পাম্প দিয়ে পানি ছিটানো হলেও ঘটনাস্থল থেকে মরা ভোলা নদীর দূরত্ব তিন কিলোমিটার হওয়ায় পানি সরবরাহে বেগ পেতে হচ্ছে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, শনিবার দুপুরের পর বনকর্মীরা কলমতেজি টহল ফাঁড়ি এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পান এবং দ্রুত আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নতুন ধোঁয়ার কুণ্ডলির ওপরও নজর রাখা হচ্ছে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, শনিবার দুপুর ১টা নাগাদ বনকর্মীরা চাঁদপাই রেঞ্জের কলমতেজি টহল ফাঁড়ি এলাকায় আগুনের ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখার পর সেখানে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ওই এলাকার আগুন এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। আমরা আমাদের নিজস্ব সেচ পাম্প দিয়ে আগুন নেভাচ্ছি। রোববার ভোর রাত পর্যন্ত আমরা আগুন নেভানোর কাজ করি। যেখানেই ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পাচ্ছি, সেখানে পানি ছিটানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বছর ৪ মে চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া এলাকায় আগুন লাগে। এতে বনের পাঁচ একর এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত ২৩ বছরে সুন্দরবনে অন্তত ২৬ বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। যার প্রায় সবগুলোই ভোলা নদী পার্শ্ববর্তী বনের উঁচু এলাকায়।

এমবি/এমবি 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর