-67e15939b2ca9.jpg)
জ্বলছে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন।
বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। গত দুই দশকে অন্তত ২৭ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যার বেশিরভাগই রহস্যজনক। ২০০২-২০২৫ সালের মধ্যে বারবার আগুন লাগার ঘটনা বনভূমির নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে।
বিশেষ করে শনিবার (২২ মার্চ) কলমতেজী টহল ফাঁড়ি এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর তেইশের ছিলা এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।যা বন বিভাগের পাশাপাশি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা প্রায় দেড় কিলোমিটারজুড়ে ফায়ার লাইন কেটে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।
বন বিভাগের দাবি, এসব অগ্নিকাণ্ডের পিছনে রয়েছে জেলে ও মৌয়ালদের অসাবধানতা, তবে স্থানীয় বনজীবীরা মনে করেন যে এটি একটি পরিকল্পিত অগ্নিসংযোগ। বর্ষার আগে বনভূমি পরিষ্কার করতে কিছু অসাধু ব্যক্তি এই আগুন ইচ্ছাকৃতভাবে ধরিয়ে দেন। এক্ষেত্রে মধু সংগ্রহকারী মৌয়ালদের মশাল ব্যবহারের সময় সতর্কতা অবলম্বন না করা এবং শুষ্ক পাতা দিয়ে আগুন লাগানোর ঘটনা অগ্নিকাণ্ডে ভূমিকা রাখে।
প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তদন্তে উঠে এসেছে বিভিন্ন সুপারিশ। যেমন- খাল পুনঃখনন, বনরক্ষীদের টহল জোরদার করা, নদী খনন, এবং পর্যবেক্ষণ টাওয়ার স্থাপন-তবে এসব পরিকল্পনা কেবল ফাইলেই বন্দি থেকেছে।
পরিবেশকর্মীরা এই পরিস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রতি বছর বর্ষার আগে সুন্দরবনে আগুন দেওয়ার কার্যকলাপ পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ ধরনের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে এখনই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে, সুন্দরবনের এই অমূল্য ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে। সুন্দরবনের অস্তিত্ব রক্ষা ও এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।’
এ বিষয়ে ‘সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী নূর আলম শেখ বলেন, ‘সুন্দরবনের কলমতেজী এলাকায় আগুন এবারই প্রথম নয়। আগেও অন্তত দুই বার এখানে আগুন লেগেছে। সেই পোড়া গাছের কয়লা হয়ে যাওয়া গোড়ার অংশ এখনো আছে। এখানে চলাচলের পথ আছে। গরু-মহিষের গোবর দেখা যাচ্ছে। এতে বোঝা যায়, মানুষের অবাধ বিচরণ আছে। কিন্তু সংরক্ষিত বনাঞ্চলে এমন অবাধ বিচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রতিবছর বর্ষার আগেই এই আগুন দেওয়া হয়। যেকোনো মূল্যে এদের প্রতিহত করতে হবে।’
শেখ আবু তালেব/এমআই