Logo

সারাদেশ

রাতের অন্ধকারে কৃষি জমিতে পুকুর খনন

Icon

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ১৫:৫৩

রাতের অন্ধকারে কৃষি জমিতে পুকুর খনন

নওগাঁর মান্দা উপজেলায় কৃষি জমি কেটে অবৈধভাবে পুকুর খননের প্রক্রিয়া চলছে জোরেশোরে। রাতের অন্ধকারে ভিটেবাড়ি ও তিন ফসলি জমি কেটে পুকুর তৈরি করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা। যা পরে ইটভাটায় মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসলি জমির পরিমাণ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামীণ অবকাঠামো।

মান্দা উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের রাধানগর ব্রিজ ঘাট সংলগ্ন সগুনিয়া গ্রামের প্রধান রাস্তার পাশে ৭-৮ বিঘা কৃষি জমি কেটে পুকুর খনন করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেতা ও কালিসভা গ্রামের মইনুল মেম্বার, আওয়ামী লীগ নেতা সামছুল এবং নুরুল ইসলাম এই অবৈধ কাজে জড়িত। খননকৃত মাটি বাঁকাপুরের হিরো ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

জমির মালিকদের আর্থিক লোভ দেখিয়ে পুকুর খননের কাজ করানো হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে রাতের আঁধারে ভেকু মেশিন দিয়ে জমি কাটা হয়, যাতে প্রশাসনের চোখ এড়ানো যায়। মাটি বহনের জন্য ট্রাক্টর ব্যবহারের ফলে গ্রামের কাঁচা ও পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাস্তায় পড়ে থাকা মাটি বৃষ্টি হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করেন, ভূমি আইন লঙ্ঘন করেও প্রভাবশালীরা বেপরোয়াভাবে পুকুর খনন করছে, কিন্তু প্রশাসন কোনো কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। 

মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে যারা কৃষিজমি কেটে পুকুর খনন করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল বলেন, ‘অনুমতি ছাড়া জমির শ্রেণি পরিবর্তন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। পুকুর খননের ফলে মাছ চাষ বাড়লেও ফসলি জমি কমে যাচ্ছে, যা খাদ্য উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে মান্দা উপজেলায় প্রায় ১৫০ একর কৃষিজমি পুকুরে রূপান্তরিত হয়েছে। এতে শস্য উৎপাদন কমছে, বাড়ছে মাটির উর্বরতা হ্রাসের ঝুঁকি।

সগুনিয়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জমি কেটে পুকুর করায় আমাদের চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। প্রশাসন যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, ভবিষ্যতে খাদ্য সংকট দেখা দেবে।’

স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও পরিবেশ কর্মীরা দাবি করছেন, অবিলম্বে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ করতে হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

এম এ রাজ্জাক/এমজে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর