Logo

সারাদেশ

ঈদযাত্রায় ভোগাতে পারে উত্তরবঙ্গগামী বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক

Icon

আরিফুল ইসলাম সাব্বির, সাভার

প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ১২:৫৩

ঈদযাত্রায় ভোগাতে পারে উত্তরবঙ্গগামী বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক

ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজের জন্য একদিকে সড়ক সংকীর্ণ, অন্যদিকে খানাখন্দের অভাব নেই। স্বাভাবিক সময়েই যেখানে যানবাহন চলে ধীরগতিতে, সেখানে চিন্তা বাড়িয়েছে ঈদযাত্রায় বাড়তি পরিবহনের চাপ। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গে যাওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আশুলিয়ার ধউর থেকে বাইপাইল হয়ে ঢাকা ইপিজেডের ১৫ কিলোমিটার সড়কে যাত্রীদের ভোগান্তির শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গে যাতায়াতের অন্যতম প্রধান সড়ক আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল এবং নবীনগর-চন্দ্রা সড়ক। এই দুই সড়ক হয়েই যাতায়াত করে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ২২ জেলার হাজারো যানবাহন। আর ঈদের আগে বৃদ্ধি পায় যানবাহনের চাপ। গেল কয়েক বছর ধরে এই সড়কের ইপিজেড থেকে আশুলিয়া হয়ে রাজধানীর আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। এ কারণে সড়ক হয়ে পড়েছে সংকীর্ণ। ফলে স্বাভাবিক সময়েই যানজট লেগে থাকে। শঙ্কা রয়েছে, এই পথটুকু পাড়ি দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যেতে পারে।

উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা নাদের পরিবহনের চালক মো. শফিক আহম্মেদ বলেন, ‘ঈদের সময় তো অন্য সময়ের চেয়ে গাড়ি বেশি হবেই। তারপরও আমরা যারা ড্রাইভার আছি, আমাদের একটু সচেতন হতে হবে। যারা সড়কে যানজট নিরসনে দায়িত্বে থাকবে তাদের ও চালকদের সচেতন হতে হবে। অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ করলে, ট্রাফিক আইন মেনে চললে যানজট কমতে পারে।’ 

উন্নয়নকাজ ঘিরে সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। রয়েছে অটোরিকশার দৌরাত্ম। ঈদযাত্রার বাড়তি চাপে তাই ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে।

সড়কের বাইপাইল এলাকায় কথা হয় পণ্যবাহী পরিবহনের চালক নাজমুল হুদার সাথে। তিনি বলেন, ‘নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইলের অবস্থা খুবই খারাপ। যে খানাখন্দ, গাড়িই তো যেতে পারে না। বড় বড় ট্রাকগুলো তো যেতেই পারে না। এগুলো মেরামত যদি করত, যানজট একটু কমত। এই বাইপাইলেই যানজটে ঘণর পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়।’ 

শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় ঈদের ছুটি শুরু হলে পোশাক শ্রমিকদের ঢল নামবে সড়কে। তাই সড়কে যাত্রীদের চাপ নিরসনে পোশাক কারখানাগুলো ধাপে ধাপে ছুটি দেওয়া আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া দুর্ঘটনা ও যানযট এড়াতে যাত্রী ও চালকদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা দেখি, গার্মেন্টস শিল্পগুলোতে একসাথে ছুটি হওয়ার কারণে অনেক ধরনের প্রতিবন্ধকতা, জ্যাম সৃষ্টি হয়। যার কারণে আমি গার্মেন্টস মালিকদেরকে অনুরোধ জানাব, তারা যাতে পর্যায়ক্রমে গার্মেন্টস শিল্পগুলো ছুটি দেন। যাতে কোনো ধরনের হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়।’

নিরাপদ সড়ক চাই ধামরাই থানা কমিটির সভাপতি নাহিদ মিয়া বলেন, ‘ঈদকে কেন্দ্র করে একাধিক ট্রিপের আশায় চালকরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালান। এতে দুর্ঘটনার শঙ্কার বাড়ে। সড়ক উন্নয়নে যেহেতু  ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে, তাই আমরা চাইবো এটাকে কীভাবে সুন্দর একটা সিস্টেমে আনা যায়। কারণ ঈদকে সামনে রেখে যানজট হয়, সেটাকে সুন্দর মনিটরিংয়ের মধ্যে আনতে হবে, যাতে যানযটমুক্ত ঈদ আমরা উপহার দিতে পারি।’

পুলিশ বলছে, সড়কে ঈদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে নেওয়া হচ্ছে বিশেষ প্রস্তুতি, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে থাকবে সর্বোচ্চ তৎপরতা।

ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো.আনিসুজ্জামান বলেন, ‘এই নির্মাণকাজ তো এভোয়েড (এড়ানো) করা যাবে না, বন্ধ করা যাবে না। নির্মাণকাজ তো আশুলিয়াবাসীর জন্য, ঢাকাবাসীর জন্য, শহরের মানুষের জন্য। মানুষ ঢাকায় আসে এবং ঢাকা থেকে মানুষ বাইরে যায়। নির্মাণকাজ চলবে। আমরা এই নির্মাণকাজের মধ্যেই গাড়িগুলো ডাইভারশন বা সার্ভিস রোড দিয়ে পার করার জন্য বলেছি।’

তিনি বলেন, ‘মানুষজন যেতে পারবে নির্বিঘ্নে। আমাদের ম্যানপাওয়ার দিয়ে আমরা গাড়িগুলো ইনকামিং এবং আউটগোয়িং দ্রুত পার করার ব্যবস্থা করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুলিশ কাজ করবে, গোয়েন্দারা কাজ করবে। মানুষের নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বচ্চো চেষ্টা করব।’

  • /এমজে
Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর