Logo

সারাদেশ

গাইবান্ধায় বিয়ে বাড়িতে পুলিশের ওপর হামলা, ৫৫৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Icon

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ২১:২৬

গাইবান্ধায় বিয়ে বাড়িতে পুলিশের ওপর হামলা, ৫৫৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে কনের বাড়িতে অবরুদ্ধ বরপক্ষকে উদ্ধারে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ। ইট-পাটকেল ও লাঠি দিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশের গাড়ি। আত্মরক্ষায় পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া পুলিশকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী।

এ ঘটনায় ৫৫৯ জনের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (৬ এপ্রিল) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল হাকিম আজাদ।

৫ এপ্রিল রাতে ওই থানার সাব-ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন বাদি হয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ, সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও কাজে বাধা দেওয়াসহ আরও বেশ কিছু অভিযোগে এ মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়হাটী হাজিপাড়া গ্রামের প্রবাসী মো. দুখু মিয়ার মেয়ের সঙ্গে পাশের রামজীবন ইউনিয়নের মো. আয়নাল হকের ছেলে মো. সবুজ সরকারের (২৮) বিয়ে হয়। ওই দিন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে গিয়ে গেটের টাকা এবং পরে ‘নরম ভাত’ ঘিরে কনে পক্ষ ও বর পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা, ধাক্কাধাক্কি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

এক পর্যায়ে বরপক্ষের লোকজন একে একে ভাতের প্লেট ছুড়ে ফেলেন এবং চেয়ার ভাঙচুর করেন। এ সময় কনের বাবার অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠান তদারকির দায়িত্বে থাকা কনের জ্যাঠা পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে বরপক্ষের একাংশ তাঁর কলার ধরে মাটিতে ফেলে মারধর করেন। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অধিকাংশ বরযাত্রী পালিয়ে যান, তবে বরসহ কয়েকজনকে আটক করে এলাকাবাসী। পরে বরপক্ষের লোকজন অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

এ ঘটনার পরদিন শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে অবরুদ্ধ থাকা লোকজনকে উদ্ধারে তাদের পরিবার সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কনের বাড়িতে অবরুদ্ধ হওয়া বরপক্ষের লোকজনকে উদ্ধার করতে যায় ওসি সহ সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কনে পক্ষের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোঁড়ে এবং গাড়িতে লাঠি দিয়ে ভাঙচুর চালায়। এ সময় পুলিশের ওপর হামলা হয়। প্রাণ রক্ষায় পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয় ওসি সহ পুলিশ সদস্যরা। পরে ওই বাড়িটিও ঘিরে ফেলে উত্তেজিত লোকজন।

পরে পুলিশের খবরে অন্যান্য পুলিশ সদস্য ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অবরুদ্ধ ওসিসহ অন্যান্যদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় গতকাল রাতে বিয়ে বাড়ির ৫৯ জন নামীয় এবং ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. ওয়াজেদ হোসেন বলেন, ‘ওসি সাহেবের ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং তাদেরকে উদ্ধার করি। এলাকাবাসীর আচরণে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘বিয়ের বাড়িতে বরসহ তার কয়েকজন অবরুদ্ধদের উদ্ধারে গেলে আমাদের লক্ষ্য করে ঢিল ছোঁড়া হয়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আমাদের ওপর হামলা করা হলে আমি পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিই। পরে ওই বাড়িটিও ঘিরে ফেলেন তারা। অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় আমরা উদ্ধার হই। ওসি বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ৫৯ জন নামীয় এবং ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

আতিকুর রহমান/এআরএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর