লালমনিরহাটে ফের বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসানোর পাঁয়তারা

মাল্টিমিডিয়া করেসপন্ডেন্ট, লালমনিরহাট
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ২১:০৩

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিয়ালখোওয়া এসসি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আবারও হাট বসানোর পাঁয়তারা করছেন ইজারাদার। হাট বসলে ব্যাহত হবে ওই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ। এতে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন মহল।
এরইমধ্যে হাট না বসানোর দাবি জানিয়ে উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবক সমাজ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা জানান, জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার শিয়ালখোওয়া এসসি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে সপ্তাহের শনিবার ও বুধবার বৃহৎ আকারের পাশাপাশি প্রতিদিন বাজার বসতো। তবে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সচেতন মহল, অভিভাবক, শিক্ষার্থীদের দাবির পেক্ষিতে গতবছর সরিয়ে নেওয়া হয় হাট। পরে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে পায় শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সম্প্রতি এক প্রভাবশালী শিয়ালখোওয়া হাটটি ইজারা নেওয়ার পর আবারও হাট বসানোর পাঁয়তারা করছে।
অভিভাবক সমাজের কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শিয়ালখোওয়া এসসি স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা, তিনটি কিন্ডারগার্টেনের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর একমাত্র খেলাধুলার জায়গায় হাট বসানোর পাঁয়তারা চলছে।
ওই হাটে তামাক, গরু, ছাগল, হাস, মুরগি, সাইকেল, মাছসহ নানা সরঞ্জামাদি ক্রয়-বিক্রয় হবে। হাটটির কার্যক্রম চালু হলে ব্যাপক লোকসমাগম, শব্দদূষণ, গরু জবাইয়ের বর্জ্য ওই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এ ছাড়া অতিরিক্ত লোকসমাগমের বাড়বে সামাজিক অপরাধ কর্মকাণ্ড।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে হাট চালু করার পাঁয়তারার বিষয়ে শিয়ালখোওয়া হাট ইজারাদার আসাদুল ইসলাম হিরুর মন্তব্য পেতে তার মোবাইলে একাধিকবার কল করেও মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাশেম আলী বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসলে অবশ্যই শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব পড়বে।
তবে হাট বসানোর ক্ষেত্রে প্রভাব কারা ফেলছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্তব্য করতে রাজি নন তিনি।
আর শিয়ালখোওয়া এসসি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিন্দ্র নাথ রায় অতিরিক্ত লোকসমাগম হলে শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব পড়বে জানালেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা বলেন, ওই দুই প্রতিষ্ঠানের মাঠে ইতিপূর্বে হাট বসত। পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দাবির পেক্ষিতে হাট সড়িয়ে নেওয়া হয়েছে।
আবারও হাট বসানের পাঁয়তারা প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ইজারাদার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। আবারও বসে কথা বলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় এবং হাটটি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সে জন্য বিকল্প স্থানও খোজা হচ্ছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে হাট বসানোর ক্ষেত্রে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।
লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুজিবর রহমান বলেন, যে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে হাট ছিল, সেগুলো সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিয়ালখোওয়ার দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভিভাবকদের দেওয়া অভিযোগের বিষয়ে অবগত রয়েছেন জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এমজে