বিএনপি-প্রশাসন মুখামুখি
বিটি মাঠে বৈশাখী মেলা হবেই, প্রয়োজনে কাফন পরব : গয়েশ্বর

কেরাণীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২১:১৯

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েস্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘কাফনের কাপড় পরার প্রয়োজন হলেও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া বিটি মাঠে বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হবেই। কেউ তা বন্ধ করতে পারবে না। যুগের পর যুগ এ মাঠে মেলা হয়ে আসছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে এই মাঠে কোনো মেলার আয়োজন করতে পারিনি। এখন খুনি হাসিনা নেই। আমরা মুক্ত। তাই এ মাঠে আনন্দ পালনের মধ্য দিয়ে মেলা হবে।’
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে তেঘরিয়া বিটি মাঠে মেলার প্রস্তুতি পরিদর্শন শেষে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘১৮৪২ সাল থেকে এই মাঠ বিটি মাঠ হিসেবে পরিচিত। বিগত সরকারের আমলে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ক্ষমতার অপব্যবহার করে কিছু মানুষের জমি অধিগ্রহণ না করে মাঠটি তার বাবার নামে নামকরণ করেন। পরে জানতে পারি মাঠটি বর্তমানে ক্রীড়া উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে চলে গেছে। বিষয়টা আমাকে হতাশ করেছে।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘প্রাচীনকাল থেকেই এই মাঠে প্রতিবছর বৈশাখী মাসে মেলার আয়োজন হয়। বিগত সরকারের আমলে তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন আমরা স্বাধীন ও মুক্ত। এই বছর জনগণ স্বাধীনভাবে বৈশাখী মেলা ব্যাপকভাবে পালন করবে।’
ক্রিকেটার জামিল মহসিনসহ কয়েকজন বলেন, ‘বৈশাখী মেলার আয়োজন করায় খেলায় বিঘ্ন ঘটছে। মাঠটিতে কর্পোরেট ঢাকা লীগ টুর্নামেন্ট চলমান থাকলেও খেলার মাঠের চারিদিকে বিভিন্ন স্টল ও সাংস্কৃতিক মঞ্চ নির্মাণের জন্য খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু হয়েছে। ১৪ এপ্রিল বিসিবির একটি ক্রিকেট ম্যাচ এ মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।’
খেলার মাঠে বৈশাখী মেলার আয়োজন করার খবর সোশ্যাল মিডিয়ার কয়েকটি মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় বিষয়টি কেরাণীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। পরে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়ার নির্দেশে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন ও কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল মাওয়া মাঠে এসে মেলা বন্ধের নির্দেশ দেন।
এ সময় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) উদ্দেশে বলেন, ‘কাফনে কাপড় পড়ে হলেও মেলা অনুষ্ঠিত হবে। আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি।’
ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের কাছে বৈশাখী মেলা অনুমতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্টেডিয়ামে মেলা আয়োজনের কোনো অনুমতি প্রশাসন দেয়নি। আবেদন করেছেন। পুলিশ প্রতিবেদনের জন্য পাঠিয়েছি। প্রতিবেদন আসলে সিদ্ধান্ত দেবো।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রীনাত ফৌজিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিটি মাঠে বিএনপির আবেদনের প্রেক্ষিতে বৈশাখী মেলা আয়োজনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হওয়ায় ওপরের নির্দেশে অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মাঠ পরিদর্শন সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, কেরানীগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল মাওয়া, কেরাণীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল (দক্ষিণ) সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন ও দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী বাবু প্রমুখ।
এরশাদ হোসেন/এমজে