Logo

সারাদেশ

পায়রা পয়েন্টের ‘ম্যাজিক চা’র জাদুতে মাতোয়ারা পর্যটকরা

Icon

বরিশাল ব্যুরো

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:২৭

পায়রা পয়েন্টের ‘ম্যাজিক চা’র জাদুতে মাতোয়ারা পর্যটকরা

পটুয়াখালীর লেবুখালীর পায়রা সেতুর পাশে গড়ে উঠেছে এক ব্যতিক্রমধর্মী পর্যটন কেন্দ্র ‘পায়রা পয়েন্ট মার্কেট’। যেখানে প্রকৃতির সৌন্দর্য আর এক কাপ ‘ম্যাজিক চা’ মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এক অনন্য পর্যটন অভিজ্ঞতা। দিন কিংবা রাত এখানে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। আর এ জনসমাগমের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে রহস্যে মোড়া, মশলাভরা ‘ম্যাজিক চা’।

পায়রা সেতুর নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা পর্যটকদের কাছে এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে এ চায়ের স্বাদ। শুধু চা নয়, তার সঙ্গে থাকছে সুগন্ধি মশলার বাহার, ঘন দুধের মালাই আর অভিনব পরিবেশনা।

চায়ের দোকানের উদ্যোক্তা কাজী দুলাল বলেন, শুধু চা নয়, আমরা দিতে চাই এক কাপ ভালো লাগা। যেসব পর্যটক এখানে ক্লান্ত হয়ে বসে পড়েন, তাদের চোখে-মুখে যে প্রশান্তি দেখি ‘ম্যাজিক চা’ খাওয়ার পর সেটাই আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসছে। কেউ বরিশাল থেকে, কেউ খুলনা, আবার কেউ সরাসরি ঢাকা থেকে। ‘ম্যাজিক চা’ এখন আর শুধু চা না, এটি একটি ব্র্যান্ড হয়ে উঠছে।

চায়ের রয়েছে তিনটি ধরন : স্পেশাল মালাই চা (৫০ টাকা), রেগুলার চা (২০ টাকা) ও মিনি চা (২০ টাকা)। সঙ্গে আছে জনপ্রিয় দুই ধরনের পান—‘পাহাড়ি পান’ (৩০ টাকা) ও ‘আগুন পান’ (১০০ টাকা)। নাম যেমন আকর্ষণীয়, স্বাদেও ঠিক তেমনি বিস্ময়কর। আগুন পান নামটি এসেছে এতে ব্যবহৃত বিশেষ মশলার জন্য, যা মুখে দিলেই আগুনের ঝাঁজে ছড়িয়ে পড়ে এক ধরনের রোমাঞ্চ।

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হোসেন বলেন, আমি এরকম চা আগে কখনও খাইনি। শুধু স্বাদ নয়, পরিবেশনা, কাপের ডিজাইন, এমনকি দোকানিদের হাসিমুখ সবকিছুতেই ছিল ভিন্নতা। এটা যেন একটা রীতিমতো অভিজ্ঞতা।

পায়রা পয়েন্ট মার্কেট এখন শুধু চায়ের জন্য বিখ্যাত নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে এক ছোটখাটো পর্যটন গন্তব্য। নদী আর সেতুর মিলনস্থলে বসে এক কাপ চায়ের চুমুক যেন ভ্রমণের ক্লান্তি ধুয়ে দেয় এক নিমিষেই।

এ ব্যতিক্রমী চায়ের স্পটটি স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ যেমন তৈরি হয়েছে, তেমনি পর্যটকদের ভিড়ে প্রাণ ফিরে পেয়েছে পুরো এলাকা।

চা প্রেমি বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সহসভাপতি মেহেদী হাসান রুবেল বলেন, আমি এসেছি বরিশাল থেকে এই চা খেতে প্রায় দুইশত টাকার পেট্রোল পরে। এটা একটা অন্যধরনের অনুভূতি।

স্থানীয় আলী নামে একজন বলেন, এ ধরনের উদ্যোক্তা পর্যটনের নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। চা দিয়ে এমন ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা তৈরির মধ্যে যে উদ্ভাবন আছে, তা প্রশংসনীয়। আমরা চাই, পায়রা পয়েন্ট হয়ে উঠুক দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য।

এখানে চায়ের পাশাপাশি যোগ করা হচ্ছে স্থানীয় হস্তশিল্প, কুয়াকাটার ফটোগ্যালারি, শিশুদের জন্য খেলাধুলার আয়োজন ও লাইভ মিউজিক। উদ্যোক্তারা বলছেন, পর্যটকদের পুরো অভিজ্ঞতাটাকে আরও সমৃদ্ধ করতে চান তারা।

জেআই জুয়েল/এমবি 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর