২০১৬ সালে সেই মুক্তিযোদ্ধার ফাঁসি চেয়েছিল স্থানীয় আ.লীগ
সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ, কুমিল্লা
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:৪৭
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে লাঞ্ছিত হয়ে আলোচনায় আসেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই ভূঁইয়া কানু বীরপ্রতীক। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য। রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রবাসী আবুল হাশেমসহ এলাকার বেশকিছু মানুষ তাকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করেন। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোরগোল পড়ে যায়। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ প্রতিবাদে সরব হয়ে ওঠেন।
চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ জানিয়েছে, আব্দুল হাই কানুর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে যুবলীগ নেতা আবু বক্কর ছিদ্দিক রানা হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এই হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আব্দুল হাই কানু ও তার ছেলে গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বিপ্লবকে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বলেন, ‘কানুর কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এলাকা ছাড়া।’
স্থানীয় অনেক বাসিন্দা জানান, যুবলীগ নেতা রানা হত্যা মামলায় ১ নম্বর আসামি আব্দুল হাই কানু। তিনি কুলিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবদুল হালিম মজুমদারকেও মারধর করেছেন। তিনি ও তার ছেলে এলাকায় ত্রাস কায়েম করেছিলেন। ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রানাকে গুলি করে হত্যা করেন কানু, তার ছেলে বিপ্লব ও তাদের সহযোগীরা। এছাড়া চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে কানুর বিরুদ্ধে।
স্থানীয় জসিম উদ্দিন বলেন, ‘কানু গত ১৭ বছরে এলাকায় সন্ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করেছেন। একাধিক হত্যা, বাড়িঘর ভাঙচুর এবং চাঁদাবাজির সাথেও তিনি জড়িত। স্থানীয়রা পূর্বের ক্ষোভ থেকে তাকে হেনস্তা করেছেন।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘আব্দুল হাই কানুর বিরুদ্ধে ৮-৯টি মামলার বিষয়ে পুরোনো অপারেটরের মাধ্যমে জেনেছি। তবে আমার কাছে একটি হত্যা মামলা এবং একটি ভাঙচুরের মামলার তথ্য রয়েছে। কানুকে হেনস্তাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আরাফাতুল ইসলাম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘সম্মানের সাথে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে সবার। কেউ অপরাধ করলে আইন অনুযায়ী বিচার হবে। অপরাধীকে জুতার মালা পরিয়ে সম্মানহানির সুযোগ আইনে নেই।’
এমজে/এইচকে