পরিচয় মিলল বোতাম কারখানায় পুড়ে ছাই হওয়া ৩ শ্রমিকের
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৪
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটি (মোল্লাপাড়া) এম অ্যান্ড ইউ ট্রিমস (বোতাম) কারখানায় আগুনে পুড়ে নিহত তিন শ্রমিকের পরিচয় পাওয়া গেছে।
তারা হলেন, দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার লোহাচড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রউফ সরকারের ছেলে সোহাগ সরকার (৩২), লালমনিরহাট জেলা সদর থানার তালুকহারাটি গ্রামের মোহাম্মদ বাবলুর ছেলে মজমুল হক (২১) এবং গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর উপজেলার মহরতপুর গ্রামের রফিক মাতুব্বরের ছেলে শাওন (২২)।
তারা মেঘনা গ্রুপের এম অ্যান্ড ইউ ট্রিমস (বোতাম) তৈরির কারখানায় রংমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন।
আহত সোহান জানান, কেমিক্যাল গোডাউনে মোট ৯ জন রংমিস্ত্রি একসাথে কাজ করছিলেন। তাদের মধ্যে মজমুল হক, সোহাগ সরকার এবং শাওন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। তা ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটি এলাকার আজমত আলী আকন্দের ছেলে জাকির হোসেন (৪০), একই এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে রনি (৩০), আব্দুল জব্বারের ছেলে নাজমুল (২৫), আব্দুর রশীদের ছেলে খোকন মিয়া (৩৫), মকবুল শেখের ছেলে লুৎফর (৪২) এবং সোহান নিজে।
পুড়ে যাওয়া কারখানার উৎপাদন ফ্লোরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রহরী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কারখানায় ১৪ জন স্টাফসহ ২৪৭ জন মেশিন অপারেটর রয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডে বোতাম তৈরির ৫০টি টানিং মেশিন এবং ৩০টি পোলিশ (বাটন ফিনিশিং) মেশিন পুড়ে গেছে। দুর্ঘটনার সময় লাঞ্চের বিরতি থাকায় বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।’
শ্রীপুর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাটন কারখানাটি ২০১৫ সালে ভাংনাহাটি এলাকায়। কারখানার বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে পরিবেশের ছাড়পত্র,অবস্থানগত ছাড়পত্র এবং নকশা অনুমোদনের অনুমতি আছে কি না বলতে পারব।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, ‘আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া তিন শ্রমিকের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
শ্রীপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, ‘আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তারা পরিদর্শন করেছে। আজকে রিপোর্ট পাব। প্রাথমিকভাবে পৌরসভা, ফায়ার সার্ভিস, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অভ্যন্তরীণভাবে তদন্ত করছে। তাদের নিকট থেকে মতামত নেব। তারপর একটা রিপোর্ট তৈরি করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিহত তিন শ্রমিকের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা করার জন্য চিন্তা করছি।’
উল্লেখ্য, রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটি (মোল্লাপাড়া) এলাকায় মেঘনা গ্রুপের এম এন্ড ইউ ট্রিমস (বোতাম) কারখানা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে তিন রংমিস্ত্রি দগ্ধ হয়ে মারা যান।
আতাউর রহমান সোহেল/এমজে