বর্ণিল সাজে সেজেছে শ্রীপুরের খ্রিষ্টান পল্লি
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২২
ছবি : প্রতিনিধি
খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ক্রিসমাস বা বড়দিন। গাজীপুরের শ্রীপুরে বড়দিন উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সেজেছে উপজেলার প্রতিটি গির্জা। আলোকসজ্জায় সজ্জিত হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান ও বাসা-বাড়ি।
গির্জা থেকে খ্রিষ্টান বাড়ি সবখানেই এখন বড়দিন পালনের প্রস্তুতি সম্পন্ন।বাড়িগুলোর সামনে সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। অতিথি আপ্যায়নের জন্য বাড়িতে বাড়িতে তৈরি করা হয়েছে রকমারি পিঠা। গির্জা ও পল্লীগুলোকে সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ঝলমলে আলোকসজ্জায়। গীর্জার ভেতরে দৃষ্টিনন্দন ডিসপ্লের পাশাপাশি প্রাঙ্গণে কুঁড়েঘর নির্মাণ করা হয়েছে। তাতে রাখা হয়েছে মাতা মেরির কোলে যিশুখ্রিস্টের মূর্তি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বড়দিন উদযাপনে বিপণিবিতানগুলো ক্রিসমাস ট্রি এবং এলইডি লাইট দিয়ে সাজানো হয়েছে। হাজার হাজার এলইডি লাইটের আলোতে ঝলমল করছে ক্রিসমাস ট্রি। প্রতিটি গীর্জায় এখন উৎসবের আবহ, চলছে নানা আয়োজন।
তবে উৎসব আনন্দ নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয় খ্রিষ্ট ধর্মালম্বীদের।
শ্রীপুরের কেওয়াচালা বাসিন্দা নিতু গমেজ বলেন, শেষ মুহূর্তে মা মেরির প্রতিকৃতি ছাড়াও শিশু যীশুকে ফুটিয়ে তোলার কাজ শেষ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আনন্দ এখন শিশু-কিশোরদের। ঘরে ঘরে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
স্বাধীন ডি কস্তা বলেন, বাড়িতে বাড়িতে কেক আর পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়েছে। উৎসবের আলোয় নিজেকে রাঙিয়ে তুলতে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সবাই। এসব কাজে ছোট শিশু থেকে শুরু করে যুবক, বৃদ্ধ সবাই সহযোগিতা করছে। বড়দিনের উৎসবের ঢেউ লাগতে শুরু করেছে অন্য ধর্মাবলম্বীদের মাঝেও। কারণ ধর্মীয় সম্প্রীতিও বড়দিনের একটা শিক্ষা।
সেন্ট মনিকা স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিস্টার সরলা পালমা বলেন, ‘বড়দিনে আমাদের বড় প্রার্থনা হচ্ছে মানুষের মধ্যে যেন ভ্রাতৃত্ববোধ গাঢ় হয়, পৃথিবী থেকে যেন অস্থিরতা দূর হয় এবং সবার মধ্যেই যেন শান্তি বিরাজ করে।’
শ্রীপুরের কেওয়াচালা ব্যাপ্টিস্ট চার্চ গীর্জার সহকারী ফাদার পাস্টার মাইকেল মল্লিক বলেন, ‘বড়দিনে আমাদের বড় প্রার্থনা হচ্ছে মানুষের মধ্যে যেন ভ্রাতৃত্ববোধ গাঢ় হয়,পৃথিবী থেকে যেন অস্থিরতা দূর হয় এবং সবার মধ্যেই যেন শান্তি বিরাজ করে।
শ্রীপুর কেওয়াচালা সেন্ট আগষ্টিন গির্জার ফাদার টমাস কোড়াইয়া ফাদার সেন্টু কস্তা বলেন, ‘বড়দিনের শিক্ষায় আলোকিত হয়ে উঠবে সমাজ। সব পরাজয় পেছনে ফেলে শান্তিময় এক পৃথিবীর প্রার্থনা থাকবে এবারের বড়দিনে।’
এ বিষয়ে কালিয়াকৈর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আফজাল হোসেন খান জানান, ‘বড়দিনকে ঘিরে সর্বাত্মক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি গীর্জায় পুলিশ পাহারা থাকবে ও টহল পুলিশও থাকবে। আশা করি নির্বিঘ্নে বড় দিনের উৎসব সম্পন্ন হবে।’
আতাউর রহমান সোহেল/এমআই